সিগারেট হুমকিতে জনস্বাস্থ্য ও টেকসই উন্নয়ন স্টাফ রিপোর্টার :: সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে সিগারেট বিক্রির ফলে যুব ও দরিদ্র শ্রেণীর জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে। ফলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে বলে বক্তারা মত বিনিময় সভায় তুলে ধরেন।

শুক্রবার (২ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর পল্টনস্থ অনলাইন মিডিয়া ফোরাম সম্মেলন কক্ষে, অনলাইন মিডিয়া ফোরাম, এলায়েন্স ফর এফসিটিসি ইমপ্লিমেন্টেশন বাংলাদেশ, এবং বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এর সম্মিলিত উদ্যোগে “এসডিজি’রলক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তামাকের অবৈধ বানিজ্যও একটি বড় চ্যালেঞ্জ” শীর্ষক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

অনলাইন মিডিয়া ফোরামের প্রধান সমন্বয়কারী শরীফ মোহাম্মাদ মাসুম এর সভাপতিত্বে উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের সাবেক উপদেষ্টা ও এলায়েন্স ফর এফসিটিসি ইমপ্লিমেন্টেশন বাংলাদেশ এর সমন্বয়কারী অধ্যাপক ডাঃ মোজাহেরুল হক।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অনলাইন মিডিয়া ফোরামের , বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের বোর্ড অব ট্রাস্টি এম রফিকুল ইসলাম মিলন, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটভুক্ত সংগঠন নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সাইদ রানা, এলআরবি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা রাজিয়া শিলা, জনস্বাস্থ্য ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ডিএম সাকলায়েন প্রমুখ। এছাড়াও অনলাইন মিডিয়া ফোরামের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথি অধ্যাপক ডাঃ মোজাহেরুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার এক বক্তব্যে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাক মুক্ত দেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সরকার প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা বাস্তবায়নে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে। ধূমপানের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করণে এবং জনস্বস্থ্য রক্ষায় প্রতি বছরই সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধি করছে। চলতি বছরের বাজেটে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেট প্যাকেটের সর্বনিম্ন খুচরা মূল্য নির্ধারণ করেছে ৩৫ টাকা। যার মধ্যে ভ্যাট এবং ট্যাক্স প্রদান করতে হয় প্রায় ২৫ টাকা অর্থাৎ সরকার ৩৫ টাকা মূল্যের প্যাকেট থেকে রাজস্ব পাবে ২৫ টাকা। অথচ দেশের কতিপয় অসাধু তামাক কোম্পানী রাজস্ব না দিয়ে ৩৫ টাকা মূল্যের সিগারেট বিক্রি করছে মাত্র ১২ থেকে ২০ টাকা যা জনস্বাস্থ্যের জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমনি রাজস্ব আইনে দন্ডনীয় অপরাধ। এর ফলে জনস্বাস্থ্য যেমন হুমকির মুখে পড়ছে তেমনি সরকার রাজস্ব থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে।

বিশেষ অতিথি ইবনুল সাইদ রানা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ অবস্থা থেকে উত্তরনের একমাত্র উপায় এ সকল কোম্পানীকে আইনগত ভাবে সীলগালা করে বন্ধ করে দেয়া। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী শুধুমাত্র রংপুরের ৫টি সিগারেট ফ্যাক্টোরী থেকে প্রতিবছর রাজস্ব আসার কথা ২২৬ কোটি টাকা, যেখানে আসছে মাত্র ১৬ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকা। রংপুর সহ দেশের বিভিন্ন স্থানের তামাক কোম্পানীগুলো সরকারের ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে এবং তরুন, যুব ও নিম্ন আয়ের মানুষের জনসা্বস্থ্যকে হুমকির মুখে ফেলে ব্যাপক মুনাফা অজর্ন করছে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা অবিলম্বে অবৈধ সিগারেট বন্ধে তামাকের ফ্যাক্টরী গেইটে ব্যান্ডরোল মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা, নকল সিগারেট উৎপাদনকারী অবৈধ কারখানাগুলোকে চিহ্নিত করে সকল মেশিনারিজ ধ্বংস ও কঠোর শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে এগুলি সীলগালা করে বন্ধ করা, নকল সিগারেট বন্ধে সিগারেট কোম্পানীকে ভ্যাট দেয়ার পূর্বে তার সকল টেড্র মার্ক আইন রক্ষা করে কিনা তা যাচাই করে দেখা, প্রতিটি সিগারেট প্রসত্তুকারক প্রতিষ্ঠান সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেস হতে ট্যাক্স স্ট্যাম্প সংগ্রহ করছে কিনা তার তালিকা সংগ্রহ ও কঠোর নজরদারি করা এবং সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ যেমন- কাষ্টমস্‌, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও প্রশাসনের সমন্বয়ের মাধ্যমে নকল এবং ব্যান্ডরোল বিহীন সিগারেট বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানান।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here