মো: জাহাঙ্গীর আলম, হোসেনপুর(কিশোরগঞ্জ)সংবাদদাতা
চার দফায় জ্বালানী তেল,বিদ্যুৎ ও সারসহ কৃষি উপকরনের দাম বৃদ্ধির ফলে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে চলতি মওসুমে বোরো আবাদ নিয়ে শঙ্কিত কৃষকরা লোকসানের ভয়ে জমি তৈরি করেও বোরোচাষ কমিয়ে দিয়ে অন্যান্য ফসলের দিকে ঝুকে পড়েছেন।এতে এ উপজেলায় বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে এ বছর ইরি-বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ৭হাজার ১৬০ হেক্টর কিন’ গতকাল সোমবার পর্যন- অর্জিত হয়েছে মাত্র ২০০ হেক্টর যা গত বছরের তুলনায় ৮৫ শতাংশ কম।গত বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ হাজার ৬৮০ হেক্টর এবং এ সময়ে বোরো চাষ হয়েছিল ১ হাজার ৫৩৬ হেক্টর।এছাড়া গত বোরো মওসুমে হোসেনপুর উপজেলায় ডিজেল চালিত সেচযন্ত্র ছিল ১হাজার ৯৪ টি এবং বিদ্যুৎ চালিত সেচযন্ত্র ছিল ৩৯৮টি।গত কয়েক বছরে ডিজেল,বিদ্যুৎ ও সারসহ কৃষি উপকরনের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় সেচ যন্ত্রের অনেক মালিকই লোকসানের ভয়ে বোরো চাষিদের সেচ সুবিধা দিতে দ্বিধা-দ্বন্দে পড়েছেন।এতে আগ্রহী বোরো চাষিরাও চরম বিপাকে পড়েছেন।
উপজেলার বাসুরচর গ্রামের কৃষক রফিক,আলম,খোকনসহ অনেকের সাথে কথা বলে জানা গেছে,বোরো চাষে ব্যবহৃত ইউরিয়া সারের দাম ৬০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজার টাকা,টিএসপি সারের দামও বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজার ১০০ টাকা এবং ডিজেলের দাম চার দফায় ৪৪ টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৬১ টাকা হয়েছে।এতে উৎপাদন ব্যয় অস্বাভাবিক বেড়ে গিয়ে কৃষকদের মোটা অংকের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। তাছাড়া উৎপাদিত কৃষিপণ্য পেয়াজ,আলু,ধান,পাটসহ অন্যান্য ফসলের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় কৃষকের উৎপাদন খরচও উঠছেনা।তাই কৃষকরা ইচ্ছা থাকা সত্বেও চলতি মওসুমে বোরো সেচের জন্য সিকিউরিটির টাকা জমা দিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।ফলে এ বছর হোসেনপুর উপজেলায় ইরি-বোরো চাষাবাদ ব্যাহত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক কামাল উদ্দিন হতাশা ব্যাক্ত করে বলেন,বর্তমানে আমন ধানের মূল্য প্রতিমণ৪৫০-৬০০ টাকা অথচ সার-কীটনাশক, সেচ,শ্রমিক খরচ ও অন্যান্য সব খরচ মিলিয়ে প্রতিমণ ধানের উৎপাদন খরচ হয় ৬০০ টাকার ওপরে।তার চেয়ে ভাল কৃষিজমি পতিত রাখা।মূলত:সার, ডিজেল,বিদ্যুৎসহ আনুসঙ্গিক ব্যয় অস্বাবাভিক বৃদ্ধির কারনে লাভের বদলে ক্ষতির আশঙ্কায় এ অঞ্চলের কৃষকরা বোরো আবাদ কমিয়ে কিংবা বাদ দিয়ে গম,ভূট্টাসহ অন্যান্য ফসলের দিকে ঝুকে পড়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুলতান আহম্মদ জানান,ডিজেল,বিদ্যুৎসহ কৃষিপণ্যের দাম বৃদ্ধির ফলে কৃষকদের উৎপাদন ব্যয় কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কৃষকদের যথাযথ পরামর্শ দিতে কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরা সচেষ্ট রয়েছেন।আশা করি সফলতা আসবে।