দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর পারস্পারিক সহযোগীতা সংগঠন সার্ক-এর ১৭তম শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে মালদ্বীপের মনোরম শহর আদ্দু সিটির প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে।

আগামী ১০ নভেম্বর রাজধানী মালে থেকে ৫শ’ কিলোমিটার দূরের এ শহরে দক্ষিণ এশিয়ার ৮ নেতা এতদঞ্চলের উন্নয়নের লক্ষ্যে শীর্ষ বৈঠকে মিলিত হবেন।

এদিকে, সার্ক শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সাথে চলছে নিরাপত্তা মহড়া।

স্থানীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানান, রাজধানী মালে থেকে দক্ষিণ এশীয় নেতৃবৃন্দকে ভারত মহাসাগরীয় এ দ্বীপে নিয়ে যাওয়ার জন্য কানেকটিং ফাইট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তিনজন প্রেসিডেন্ট ও পাঁচজন প্রধানমন্ত্রীর জন্য সেখানে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

নতুন আমদানিকৃত গাড়ী ও নিরাপত্তা কর্মীদের মোটর ভোযাত্রাসহকারে রাস্তায় টহল দিতে দেখা গেছে। উপকূল রী এবং মালদ্বীপের প্রতিরা বাহিনী আদ্দুর চার পাশে সতর্কতামূলক টহল দিচ্ছে।

আদ্দুর চার পাশে কয়েকটি ছোট দ্বীপ রয়েছে। এর একটি হচ্ছে সাংগ্রিলা দ্বীপ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ দ্বীপেই অবস্থান করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের জন্য শেখ হাসিনা বুধবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফাইটে ঢাকা ত্যাগ করবেন।

সম্মেলনে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলংকা এবং স্বাগতিক মালদ্বীপের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা অংশ নেবেন।

সম্মেলনে শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট মহিন্দ রাজাপাকসে, আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানী, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী জিগমে ইউসের থিনলে, নেপালের প্রধানমন্ত্রী ড. বাবুরাম ভট্টরায়ও যোগ দেবেন।

শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে হিতাদুতে একটি নতুন কনভেনশন সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে রোববার কর্মকর্তা পর্যায়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। পররাষ্ট্র সচিবরা এখন আলোচ্যসূচি তৈরি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেছেন।

আগামী ৯ নভেম্বর ৮টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে আলোচ্যসূচি উপস্থাপন করা হবে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েস আজ সোমবার মালে পৌঁছেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির আজ মঙ্গলবার পৌঁছার কথা রয়েছে।

সার্ক সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের শীর্ষ সম্মেলনে কয়েকটি সদস্য দেশের মতপার্থক্য নিরসন, দারিদ্র্য বিমোচন এবং দক্ষিণ এশিয়ায় উন্নয়নের গতিশীলতার ওপর আলোকপাত করা হবে।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, পদস্থ কর্মকর্তাদের চারদিনের আলোচনা শেষে ১০ নভেম্বর শীর্ষ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ চারটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিতে স্বার করতে পারেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, আলোচনায় সমুদ্রসীমা, দক্ষিণ এশীয় ফোরামকে সক্রিয়করণ, জ্বালানি সহযোগিতা এবং জলবায়ূর পরিবর্তন ইস্যু আসতে পারে।

উল্লেখ্য, প্রথম সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশে সার্ক-এর জন্ম হয়। সার্ক শীর্ষ সম্মেলন চলাকালে তুরস্কের পর্যবেক্ষক হওয়ার আবেদন নিয়ে আলোচনা হবে। বর্তমানে চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ ৯টি দেশ সার্ক-এ পর্যবেক্ষকের মর্যাদা পেয়েছে।

শেখ হাসিনা শীর্ষ সম্মেলনের পাশাপাশি ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংসহ দণি এশীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে হিতাদু কনভেনশন সেন্টারে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

মালদ্বীপে এ নিয়ে তৃতীয়বার সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর আগে ১৯৯০ ও ১৯৯৭ সালে পঞ্চম ও নবম সার্ক শীর্ষ সম্মেলন মালেতে অনুষ্ঠিত হয়।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/নিউজ ডেস্ক

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here