মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
বুধবার বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
সাক্ষগ্রহণের প্রথম দিন মাহবুব আলম হাওলাদার নামে এক মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
দ্বিতীয় সাক্ষী রুহুল আমিন নবীনের সাক্ষ্য দেয়ার একপর্যায়ে আদালত আগামীকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সাক্ষ্য গ্রহণ মুলতবি করেন। বৃহস্পতিবার নবীন তার সাক্ষ্যের বাকী অংশ শেষ করবেন।
এদিকে সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিন সাক্ষীদের কোনো ধরনের জেরা করেননি সাঈদীর আইনজীবীরা। আগামী রোববার প্রথম সাক্ষী মাহবুব আলম হাওলাদারকে জেরা করা হবে বলে আসামী পক্ষের আইনজীবীরা জানান।
সাক্ষ্যগ্রহণের আগে বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, সাক্ষী শুধু তার নিজের নাম, বয়স, ধর্ম ও পেশা বলবে। ব্যক্তিগত ঠিকানা বা পরিচয় গোপন রাখবে। আর গোপন রাখা বিষয়গুলো নিয়ে কোনো পক্ষের আইনজীবী সাক্ষীকে জেরা করতে পারবে না।
এছাড়া সকালে সাঈদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম সময় প্রার্থনা এবং সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি করাসহ তিনটি আবেদন করলে সবগুলোই খারিজ করে দেন ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে সকাল সোয়া নয়টার দিকে মাওলানা সাঈদীকে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
সাঈদীর আইনজীবী তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সাক্ষীর জেরা করা আসামীপক্ষের আইনী অধিকার। এজন্য আমরা আদালতের কাছে সময় চেয়েছি যাতে সাক্ষীর দেয়া বর্ণনার স্থান ঘুরে দেখে এসে তারপর তাকে জেরা করা যায়। এতে সত্য ঘটনা উদঘাটন করা সম্ভব হবে।
সাক্ষীর বক্তব্যকে শতাব্দীর সেরা মিথ্যাচার দাবি করে তিনি বলেন, ‘সাঈদীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন। সাক্ষীকে জেরার মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে করা মিথ্যাচার বালির বাঁধের মতো ধসে যাবে বলে আমরা আত্মবিশ্বাসী।’
তাজুল ইসলাম বলেন, বলেন, ‘ট্রাইব্যুনালের স্বচ্ছতার জন্যই আমরা প্রসিকিউশনের কাছে সিজার লিস্ট ও ডকুমেন্ট চেয়েছি, যাতে উভয় পক্ষের দেয়া তথ্য উপাত্তের মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য বিচার হয়।’
অন্যদিকে প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী বলেন, আজ দুজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ আরো একধাপ এগিয়ে গেল।
তিনি বলেন, এ সাক্ষ্য র মাধ্যমে সাঈদীর যুদ্ধাপরাধের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। সাঈদী বিশাবালি নামে একজনকে নারিকেল গাছের সাথে বেঁধে গুলি করে হত্যা করতে নির্দেশ দেয় বলেও সাক্ষীর সাক্ষ্য থেকে বের হয়ে আসে।
প্রসঙ্গত, গত ২০ নভেম্বর সাঈদীর বিরুদ্ধে প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য ছিল। ওইদিন এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের বিষয়ে সূচনা বক্তব্যের আংশিক উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। বাকি অংশ উপস্থাপন করা হয় পরদিন। ওইদিন ট্রাইব্যুনাল ৭ ডিসেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/ঢাকা