টানেলষ্টাফ রিপোর্টার :: চীনের সাংহাইয়ের আদলে চট্টগ্রামকে গড়ে তুলতে কর্ণফুলীতে একটি টানেল নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ৩ দশমকি ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গ নির্মাণ করে কর্ণফুলী নদীর দুই তীরকে যুক্ত করতে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের অনুমোদন করেছে সরকার।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘কনস্ট্রাকশন অব মাল্টি ল্যান্ডরোড টানেল আন্ডার দ্য রিভার কর্ণফুলী’ র্শীষক এ প্রকল্প অনুমোদন পায়।

এই টানেল নির্মাণকে সরকারের ‘স্বপ্নের প্রকল্প’ অভিহিত করে প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এর মধ্য দিয়ে সরকার চট্টগ্রামকে চীনের সাংহাইয়ের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ হিসেবে গড়ে তুলতে চায়।

শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেকের বৈঠকের পর পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘এ টানেল নির্মাণ নিয়ে অনেক শঙ্কা ও সংশয় ছিল। আজ প্রকল্পটির চূড়ান্ত অনুমোদনের মধ্য দিয়ে তা দূর হলো। এটি একটি স্বপ্নের প্রকল্প। ২০২০ সালের আগেই এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে’।

এ প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৪৪৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, যার ৪ হাজার ৭৯৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকার যোগান দেবে চীনের এক্সিম ব্যাংক। বাকি ৩ হাজার ৬৪৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে সেতু কর্তৃপক্ষ।

মন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে কর্ণফুলী নদীর ওপর দু’টি সেতু রয়েছে। তার ওপর আরও ব্রিজ নির্মাণ করা হলে গোড়ায় পলি জমে নদী নাব্যতা হারাতে পারে। তাই সরকার এ টানেল নির্মাণ করছে’।

এ টানেল একদিকে চট্টগ্রাম শহরকে বন্দর এলাকার সঙ্গে এবং অন্যদিকে আনোয়ারা উপজেলাকে চট্টগ্রাম মহানগরীর সঙ্গে যুক্ত করবে। টানেল চালু হলে পর্যটন নগরী কক্সবাজারসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ আরও সহজ হবে। এতে কর্ণফুলীর দুই সেতুর ওপর যানবাহনের চাপ কমবে বলেও আশা করা হচ্ছে।

এ টানেল নির্মাণের জন্য গত বছর ১০ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়। এরপর বাংলাদেশ সেতু র্কতৃপক্ষ, চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি (সিসিসিসি) ও অভি অরুপ অ্যান্ড পার্টনার্স হংকং লিমিটেড যৌথভাবে টানেলের কারিগরি ও অর্থনৈতিক সমীক্ষা করে। গত ৩০ জুন সেতু কর্তৃপক্ষ ও সিসিসিসির মধ্যে হয় বাণিজ্যিক চুক্তি।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here