আল-মামুন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: মানিকছড়ি উপজেলার একমাত্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে চলতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তি প্রক্রিয়ায় অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কোটা অনুযায়ী উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী ভর্তি না হওয়ার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অর্ধলক্ষাধিক টাকার বিনিময়ে অকৃতকার্য ১০ শিক্ষার্থীকে ভর্তির সুযোগ দিয়েছেন প্রধান শিক্ষিকাসহ দূর্ণীতি পরায়ন কিছু শিক্ষক। এ নিয়ে অভিভাবক মহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার একমাত্র রানী নিহার দেবী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ইতিপূর্বে ভর্তি প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়ম হয়ে আসছিল। এছাড়া ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়িয়ে এবং পরীক্ষার হলে অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। চলতি শিক্ষাবর্ষ শুরুর পূর্বেই খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক জেলার সবকটি সরকারি হাই স্কুলে গত ৩০ ডিসেম্বর-১৫ তারিখে পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা নেন।
জেলা প্রশাসকের পক্ষে মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আমলে নিয়ে চার শতাধিক পরীক্ষার্থীর মধ্য থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ৯০, সপ্তম শ্রেণিতে ৬জন,অষ্টম শ্রেণিতে ৬ এবং নবম শ্রেণিতে ৬জনকে (কোটানুযায়ী) উত্তীর্ণ ঘোষণা করেন। ভর্তির শেষ তারিখ ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ৮২, সপ্তম শ্রেণিতে ৫জন, অষ্টম শ্রেণিতে ৫ এবং নবম শ্রেণিতে ৪জন ভর্তি হয়।
পরে উপজেলা শিক্ষা কমিটি পূণরায় বৈঠকে বসে অপেক্ষামান তালিকা থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ৩ এবং নবম শ্রেণিতে ২ জনকে উত্তীর্ণ ঘোষণা করেন। কিন’ স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রমা রাণী চাকমার নিদের্শে কতিপয় শিক্ষক প্রশাসনের সিদ্ধান্ত না মেনে অর্থের বিনিময়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ৫,সপ্তম শ্রেণিতে ২জন, অষ্টম শ্রেণিতে ২ এবং নবম শ্রেণিতে ১ জনসহ মোট ১০জন শিক্ষার্থীর নিকট থেকে গড়ে ৬ হাজার টাকা করে ৬০ হাজার টাকা নিয়ে অকৃতকার্যদেও ভর্তি করান।
বিষয়টি জানাজানি হলে অভিভাবক মহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসলে ২৬ জানুয়ারি স্কুল চলাকালিন সময়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্কুল পরিদর্শনে আসেন। এ সময় তিনি বিভিন্ন শ্রেণি কক্ষে শিক্ষার্থীতে তল্লাশি করে ৪টি মোবাইল সেট জব্দ করেন। এছাড়া ভর্তি রেকর্ড যাচাইকালে অনিয়মের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তির সত্যতা খুঁজে পান।
এ সময় অবৈধভাবে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, তাদেও অভিভাবকরা গড়ে ৬ হাজার টাকা শিক্ষকদের উৎকোচ দিয়ে ভর্তি করিয়েছেন। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক রমা রাণী চাকমার নিকট ইউএনও ব্যাখ্যা চাইলে তিনি তা আমলে না নিয়ে কৌশলে এড়িয়ে যান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষিকা রমা রানী চাকমা অকৃতকার্য শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়টি স্বীকার করলেও টাকা পয়সা লেনদেনের বিষয়ে তিনি অবহিত নন বলে জানান।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যুথিকা সরকার বলেন,শিক্ষার্থী ভর্তিতে প্রশাসনের স্বচ্ছ প্রক্রিয়াকে অস্বচ্ছ করেছেন
সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা! যা কোনভাবেই কাম্য ছিলনা। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।