ডেস্ক রিপোর্ট:: আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিসহ অন্যান্য দাবিতে বিএনপির ডাকে সারা দেশে চলছে দ্বিতীয় দফার ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ।
দ্বিতীয় দিন আজ সোমবার সকালে অনেকটা স্বাভাবিক দেখা গেছে নয়াপল্টন এলাকা। পাশাপাশি সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে পুলিশকেও।
নয়াপল্টনে গিয়ে দেখা যায়, ভোর থেকেই গাড়ি, রিকশা, সিএনজির পাশাপাশি সাধারণ মানুষের উপস্থিতিও লক্ষ্য করা যায়।
কথা হয় নটরডেম কলেজের ছাত্র ইশতিয়াক হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, সকাল ৮টা বাজে ক্লাস আছে। অবরোধ চলছে জানি, তাই একটু সাবধানে চলাফেরা করার চেষ্টা করছি।
বেসরকারি চাকরিজীবী রুহুল আমিন বলেন, অবরোধ চললেও অফিস তো খোলা ,না গেলে একদিনের বেতন কাটা পড়ে। সুতরাং বের হতেই হবে।
এদিকে অবরোধের ফলে যেন সহিংসতা না হয়, সেজন্য সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে পুলিশকে। কর্মরত এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন,অবরোধের কারণে কোনো সহিংসতা যেন না ঘটতে পারে,তার জন্য আমরা সতর্ক এবং প্রস্তুত রয়েছি।
উল্লেখ্য, সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে এবং মির্জা ফখরুলসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের মুক্তির দাবিতে রোববার সকাল থেকে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। তাদের যুগপৎ আন্দোলনের শরিকরাও এই অবরোধ পালন করছে। পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীও আলাদা করে এই ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে।
এর আগে গত সপ্তাহের শেষ তিন দিন (৩১ অক্টোবর-২ নভেম্বর) টানা অবরোধ পালন করে বিএনপি-জামায়াত। তার আগে ২৯ অক্টোবর হরতাল পালন করে তারা।
গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বড় ধরনের সমাবেশ করে বিএনপি, জামায়াত ও আওয়ামী লীগ। সেদিন দুপুরের দিকে বিএনপির সমাবেশে আসা লোকজনের সঙ্গে কাকরাইল মোড়ের কাছে আওয়ামী লীগের সমাবেশগামী লোকজনের সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ সেখানে হস্তক্ষেপ করার পর এক পর্যায়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা হয় এবং বেশকিছু গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। উপস্থিত সাংবাদিকদেরও ব্যাপক মারধর করা হয়। এরপর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বিএনপির সমাবেশ ভন্ডুল করে দেয়। এর ফলে সংঘর্ষ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে এক পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়, পুলিশের বহু সদস্যকে পিটিয়ে আহত করা হয় এবং পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালিয়ে কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্সে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।
সমাবেশ বানচালের প্রতিবাদে পরদিন ২৯ অক্টোবর বিএনপি হরতাল পালন করে। হরতালের দিন সকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি এখন কারাগারে আছেন।
হরতালের পর একদিন বিরতি দিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে টানা ৩ দিনের অবরোধ কর্মসূচি দেয় বিএনপি-জামায়াত। ওই কয়েকদিনে মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ বিএনপির শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।