আইয়ুব বাচ্চু স্টাফ রিপোর্টার :: লাখো ভক্তকে কাঁদিয়ে তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে। তার মৃত্যুতে পুরো সংগীতাঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। গিটারের জাদুতে ভক্তদের আর মাতাবেন না কিংবদন্তি ব্যান্ড-তারকা আইয়ুব বাচ্চু।

বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) সকালে আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রাজধানীর পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতালে ছুটে আসেন সংগীত, চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতি অঙ্গনের তারকারা। এই কিংবদন্তি শিল্পীকে শেষবারের মতো দেখতে হাসপাতালের সামনে ভিড় জমান তার শত-সহস্র ভক্তও।

হাসপাতালে এসে আইয়ুব বাচ্চুকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করছিলেন তার সংগীতাঙ্গনের সহকর্মীরা।

ব্যান্ডদল ‘সোলস’র পার্থ বড়ুয়া বলেন, ‘কিছু বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। তিনি আমার শিক্ষক ছিলেন। আমাকে তৈরি করেছেন। গিটার শিখিয়েছেন। গান করতে ঢাকায় নিয়ে এসেছিলেন।’

‘কখনোই ভাবিনি বাচ্চু ভাই চলে যাবেন। ওনার মতো গিটারিস্ট বাংলাদেশ আর আছে কি-না আমার জানা নেই। সংগীতাঙ্গন অনেক বড় এক সম্পদ হারালো। বাচ্চু ভাইয়ের মতো শিল্পী আর বাংলাদেশে আসবে কি-না সন্দেহ আছে।’

‘আর্ক’ ব্যান্ডদলের হাসান বলেন, ‘এ ক্ষতি পূরণ হবার মতো নয়। বহুদিন বাচ্চু ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করেছি। তিনি ছিলেন সংগীতের উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।’

সংগীতশিল্পী ফাহমিদা নবী বলেন, ‘বাচ্চু ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক। তিনি সবসময় স্টেজ শো শেষে সবাইকে নিয়ে জাতীয় সংগীত গাইতেন। এটা একজন শিল্পীর জন্য অনেক বড় গুণ। সবাইকে বলবো তার আত্মার মাগফেরাতের জন্য দোয়া করতে।’

চিত্রনায়ক ফেরদৌস বলেন, ‘যখন সংগীতের নতুন একটি ধারা তৈরি হচ্ছিলো ঠিক তখন বাচ্চু ভাই চলে গেলেন। সংগীতে বড় একটা শূন্যতা তৈরি হলো।’

চিত্রনায়ক হেলাল খান বলেন, ‘আমি ওনার গানের অনেক বড় ভক্ত ছিলাম। এভাবে অকালে তাকে হারাতে হবে, তা ভাবতেও পারিনি। সংগীতের বড় ক্ষতি হয়ে গেলো।’

পপ তরকা ফেরদৌস ওয়াহিদের ভাষ্যে, ‘গানের জগতের একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটলো। তিনি ছিলেন ক্ষণজন্মা। তার চলে যাওয়ার ক্ষতি আর কখনোই পূরণ হবে না।’

গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর বলেন, ‘আইয়ুব বাচ্চু বড়দের সম্মান করতেন ছোটদের স্নেহ করতেন। তিনি রয়েছেন জনপ্রিয়তার মধ্যগগনে। তাকে হারিয়ে ব্যান্ডের গানে হাহাকার সৃষ্টি হলো। সংস্কৃতি অঙ্গনে কালো ছায়া নেমে এলো। তরুণ প্রজন্ম তার থেকে শিক্ষা নেবে সেটাই আশা করছি।’

সংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর বলেন, ‘তরুণরা যখন তার কাছ থেকে দু’হাত ভরে নেবেন তখনই বেদনার সাগরে ভাসিয়ে চলে গেল। সংগীত নিয়ে যারা গবেষণা করবেন তারা আইয়ুব বাচ্চুকে এড়িয়ে যেতে পারবেন না।অনেকে তাকে আইকন মনে করতেন।’

উপস্থাপক হানিফ সংকেত ফেইসবুকে এক স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘আমাদের মধ্যে আত্মিক যোগাযোগ ছিল। ওকে আমি কখনোই গম্ভীর থাকতে দেখিনি। সংগীত শিল্পী হিসাবেও বাচ্চু ছিল সফল এবং জনপ্রিয়।’

শাফিন আহমেদ বলেন, ‘সারা বিশ্বের সামনে বাংলা গানকে পৌঁছে দিলেন তিনি। তার চলে যাওয়াটা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। শূন্যতা পূরণ করার মতো কেউ নাই। বাংলা গানের বড় ক্ষতি হয়ে গেল। মানুষটা ভালো ছিল, সহজেই মানুষকে কাছে টেনে নিতেন।’

ফেইসবুকে এক স্ট্যাটাসে সংগীত শিল্পী টিপু লিখেন, ‘বাচ্চু ভাইয়ের সাথে স্মৃতির শেষ নেই কিন্তু ওনার সাথে গল্পগুলো যে স্মৃতি হয়ে যাবে সেটা ভাবিনি কখনো। ওপারে ভালো থাকুন গীটারের জাদুকর।’

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here