জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় মো. হাসমত মিয়া(৪৫) নামের একজনকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। উপজেলার ভূনবীর ইউনিয়নের লৈয়ারকূল গ্রামে বৃহস্পতিবার সকালে ঐ হত্যাকান্ডের পরই পালিয়ে যাওয়ার সময় এলাকাবাসী ধাওয়া করে ঘাতক দলের এক সদস্যকে আটক করতে সক্ষম হয়। ঘটনার পর পরই শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উত্তপ্ত এলাকাবসীকে শানত্ম করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে । নিহত হাসমতকে বাচাতে গিয়ে প্রতিপক্ষের দায়ের আঘাতে স্ত্রী আয়েশা আক্তার গুরুতর আহত হয়। এব্যাপারে ১০ জনকে আসামী করে শ্রীমঙ্গল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসী ও শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ভূনবীর ইউনিয়নের লৈয়ারকূল গ্রামের হাসমত মিয়া ও এরশাদ গংদের সাথে বাড়ীর পুকুর ও জায়গা নিয়ে দীর্ঘ দিন যাবৎ বিরোধ চলছিল। হাসমত মিয়ার দখলে থাকা পুকরে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে পার্শবর্তী এরশাদ মিয়া গত ২৪ অক্টোবর থানায় মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে ইউপি চেয়ারম্যান উদ্যোগ নিলেও জায়গার স্বত্ব দাবীদার মো. হাসমত মিয়ার অনঢ় অবস্থানের কারণে বিষয়টি সূরাহা হয়নি।
বৃহস্পতিবার সকাল আনুমানিক সাড়ে সাতটায় এরশাদ মিয়ার নেতৃত্বে ১৬/১৭ জন লোক দা, বল্লম, লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অতর্কিতভাবে হাসমত মিয়ার বাড়িতে চড়াও হয়। এ সময় হাসমত মিয়া্ তার মোটর সাইকেল যোগে পালিয়ে যাবার চেষ্টাকালে সন্ত্রাসীরা তাকে দা দিয়ে মাথা, দু পা, ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে দা দিয়ে কুপিয়ে নিসংশভাবে আঘাত করে। ফলে ঘটনাস্থলেই হাসমতের মৃত্যু ঘটে। এদিকে স্বামীকে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টাকালে ঘাতকরা স্ত্রী আয়েশা বেগম (৩২) কে ও দা দিয়ে কুপিয়ে মারাত্বকভাবে আহত করে। হত্যাকান্ড সংঘটিত করার পর ঘাতকদলের সদস্যরা পালিয়ে যাবার চেষ্টাকালে গ্রামবাসী ঘাতক দলের সদস্য শের আলীকে আটক করতে সক্ষম হয়। ঘটনার পর পরই গ্রামবাসী উত্তেজিত হয়ে ঘাতকদের বাড়ি ঘরে হামলা চালানোর চেষ্টা করে। শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। নিহত হাসমত মিয়ার লাশ ময়না তদনেত্মর জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এঘটনায় নিহতের স্ত্রী আয়েশা আক্তার বাদী হয়ে ১০ জনকে আসামী করে শ্রীমঙ্গল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
এব্যাপারে শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ জানান, পরিকল্পিতভাবেই এ নিসংশ হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে। আসামীরা সদলবলে দা ও বল্লম নিয়ে নিহত হাসমতের উপর ঝাঁপিয়ে পরে হামলা করে তাকে হত্যা করেছে। তবে মামলার স্বার্থে রিপোর্টে আসামীদের নাম উল্লেখ না করার জন্য তিনি অনুরোধ জানান।
ইউনাইটেডন নিউজ ২৪ ডট কম/কাওছার ইকবাল/শ্রীমঙ্গল