শেরপুরের সীমানতবর্তী পাহাড়ী গ্রামগুলোতে গত কয়েক দিনে বন্য হাতির তাণ্ডবে পাকা আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। হাতির পাল জেলার ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার প্রায় ৩০ টি গ্রামের কয়েক’শ একর পাকা ফসলের ক্ষেত লন্ডভন্ড করে সর্বশান্ত করেছে অনেক কৃষকের। এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যহাতির অভয় আশ্রমের প্রস্তাবটি দীর্ঘদিন থেকে ফাইল বন্দি পড়ে রয়েছে।

সীমান্তের মানুষ বন্যহাতির তাণ্ডব আতঙ্কিত। এলাকার কৃষকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জমিতে চাষাবাদ করলেও বন্যহাতির তাণ্ডবে ফসল ঘরে নিতে পারছেন না। এলাকাবাসী জানায় এ পর্যনত জেলার পাহাড়ি গ্রামগুলোতে বন্যহাতির তাণ্ডবে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ প্রায় ৬০ জনের মৃত্যু ও তিন শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন ।

এলাকাবাসীর অভিযোগ গারো পাহাড়ের পাদদেশে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমানত ঘেঁষা গ্রাম তাওয়াকোচা, গুরুচরণ দুধনই, পানবর, ছোট গজনী, বাকাকুড়া, গজনী, হালচাটি, গান্ধীগাঁও, নওকুচি, রাংটিয়া, বানাইপাড়া, সন্ধাকুড়া, গোমড়া ও হলদীগ্রাম এলাকায় গত কয়েক বছর যাবত চলছে লাগাতার বন্য হাতির তান্ডব। প্রায় প্রতি রাতেই কোন না কোন গ্রামে চলে বন্যহাতির তাণ্ডবলীলা। বন্যহাতির দল দিনের বেলায় গভীর অরণ্যে আশ্রয় নিচ্ছে এবং রাতে লোকালয়ে নেমে এসে ঘরবাড়ি, গাছপালা, কৃষকের গোলার ধান ও ক্ষেতের ফসল সাবাড় করে চলেছে।

উপজাতি ও পাহাড়ী বাঙ্গালী অধ্যুষিত এসব এলাকা বন্যহাতির তাণ্ডবে বিপর্যসত। এসব গ্রামবাসীর এখন পেটে ভাত নেই, পরনে কাপড় নেই। রাত জেগে হাতি তাড়িয়ে দিনের বেলা কেউই কোন কাজ করতে পারছে না। তারা না খেয়ে থাকলেও রাতে হাতি তাড়ানোর জন্য তাদের মশালের তেল কিনতে হচ্ছে ।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রথম প্রথম গ্রামবাসীর মধ্যে মশাল ব্যবহারের জন্য কেরোসিন তেল বিতরণ করা হলেও কিছুদিন পর তা বন্ধ হয়ে যায়।
এ ছাড়া সরকারিভাবে হাতি তাড়ানোর ব্যাপারে তেমন কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

২০১০ সালে বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী জি এম কাদের হাতি এবং মানুষ পাশাপাশি অবস্থানের জন্য এখানে এশিয়ার প্রথম হাতির অভয় আশ্রমের তৈরীর লক্ষ্যে একটি প্রস্তাব মন্ত্রানালয়ে পাঠানোর কথা বললেও অজ্ঞাত কারনে তা লাল ফিতায় বন্দি রয়েছে।

এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রবিউল আলম বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তাদেরকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাহায্য দেওয়া হবে। তবে হাতির ব্যাপারে জাতীয়ভাবে চিন্তা করা দরকার । বাংলাদেশ এবং ভারত যৌথভাবে একটি হাতির অভয় আশ্রম করা হলে তা ভাল হবে।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/শাহরিয়ার মিল্টন/শেরপুর

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here