ডেস্ক রিপোর্ট::  আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা যেদিন ফিরে এসেছিলেন সেদিন প্রকৃতিও অঝর ধারায় কেঁদেছিল। সেদিন এয়ারপোর্টে লক্ষ লক্ষ জনতার মুখে স্লোগান ছিল ঝড়বৃষ্টি আঁধার রাতে, শেখ হাসিনা আমরা আছি তোমার সাথে।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা এদেশের মাটিতে পদার্পণ করে বলেছিলেন- আমার হারানোর কিছু নেই, পিতা-মাতা-ভাই, আত্মীয় হারিয়ে আমি বাংলার জনগণের কাছে ফিরে এসেছি। আপনারাই আমার আপনজন, আপনারাই আমার আত্মার আত্মীয়। আমরাই আবার গণতন্ত্র উদ্ধার করব।

আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আগামীকাল বুধবার শেখ হাসিনার ৪৩তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, সেদিন ঝড়-বৃষ্টি শেখ হাসিনাকে থামাতে পারেনি। তিনি ঠিকই গণতন্ত্রকে উদ্ধার করেছেন। তিনি দেশে ফিরে এসেছিলেন বলেই আমরা গণতন্ত্র ফিরে পেয়েছি, মানুষের অধিকার ফিরে পেয়েছি। আজ এই মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কনভেনশন হলে দাঁড়িয়ে বলতে পারি চিকিৎসা সুযোগ নয়, চিকিৎসা আমার অধিকার। এভাবেই উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৯৮১ সালের ১৭ মে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরেছিলেন বলেই গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধার হয়েছিল। তিনি ফিরে এসেছিলেন বলেই বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হলো, তিনি ফিরে এসেছিলেন বলেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে। এগুলোর কোনো কিছু হতো না যদি বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বদেশ প্রত্যার্তন না করতেন।

তিনি আরও বলেন, তিনি এসেছিলেন বলেই এদেশে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল হয়েছে। এ দেশের কোনো রোগী যেন বাইরে না যায় সে জন্য উন্নতমানের চিকিৎসা ব্যবস্থা করেছেন। দেশে ১১৩টি মেডিকেল কলেজ হয়েছে, এখন দেশে চিকিৎসকের সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই আমরা করোনা মহামারিকে সফলতার সাথে মোকাবিলা করতে পেরেছি।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী বলেন, বাংলাদেশ কেন এগিয়ে গেল তার চারটি কারণ দেখিয়েছেন পাকিস্তানের সুশীল সমাজ। প্রথম কারণ বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ, এখানে সাম্প্রদায়িতকতার বিষবাষ্প ছড়ানো হয় কিন্তু এ দেশের মানুষ তা গ্রহণ করে না। দ্বিতীয় হলো নারীর ক্ষমতায়ন। তৃতীয় হলো অগণতান্ত্রিকভাবে এদেশে কেউ আর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে পারবে না। চতুর্থ হলো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যিনি শুধু দেশের মানুষের অনুপ্রেরণা নয়, তিনি সারা বিশ্বের নেতাদের অনুপ্রেরণা। যার কারণে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে দুর্বার গতিতে। তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের রাজনৈতিক আন্দোলনের পাশাপাাশি সাংস্কৃতিক আন্দোলনেও অধিক সক্রিয় হওয়ার অনুরোধ জানান।

যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যা করেছিল জিয়াউর রহমান-মোস্তাক গং। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে এদেশে কোনো গণতন্ত্র ছিল না। গণতন্ত্র ছিল খুনি জিয়ার সেনা ছাউনিতে বন্দি। মানুষের কথা বলার অধিকার ছিল না, রাতের পর রাত কারফিউ জারি করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সামরিক অফিসারদের মিথ্যা অজুহাতে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে হত্যা করেছিল খুনি জিয়া। খুনি জিয়া হ্যাঁ-না ভোটের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিল। বাংলাদেশ যখন গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত, পথহীন, উদ্দেশ্যবিহীন, দেশের যুব সমাজ যখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে, খুনি জিয়া শাসনের নামে শোষণের মাধ্যমে যুব সমাজকে মাদক, অস্ত্র দিয়ে, টাকা দিয়ে ধ্বংস করা শুরু করলেন, তখন জাতির সেই সংকটময় মুহূর্তে অন্ধকারে আলোক শিখা হয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। সেদিন বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসেছিলেন বলেই আমরা ফিরে পেয়েছি গণতন্ত্র।

তিনি আরও বলেন, আবারও সেই বিএনপি-জামায়াত দেশকে, দেশের মানুষকে, বঙ্গবন্ধুকন্যাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে, আবারও পেট্রোল বোমায় গাড়ি পোড়ানো, মানুষ হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। আমরা যুবলীগ দেশের সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের সকল ষড়যন্ত্র রাজপথেই কঠোরভাবে প্রতিহত করব। শেখ হাসিনার চলার পথ মসৃণ রাখব।

আলোচনা সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। সঞ্চালনা করেন আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।

এতে আরও বক্তব্য রাখেন- যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড. মামুনুর রশীদ, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here