যে কারনে শূকরের মাংস হারামইউনাইটেড নিউজ ডেস্ক :: কলিজা খাওয়া হালাল হলে রক্ত কেন নয়? গদ্যটি পড়ে জাপানের রাজধানী টোকিও থেকে রহমান মনি মুগদ্ধতা প্রকাশ করে পত্র লিখেছেন। অভিযোগের সুরে বলেছেন, প্রবাসীদের অনেকে শূকরের মাংস খেয়ে থাকে।

অথচ তারা মুসলিম। আপনার গদ্যে শূকরের মাংস হারাম কেন? প্রশ্নে জবাব চাই। রহমান মনির কাছে জানতে চাই যে শুকর দেশের মাটিতে হারাম, প্রবাস জীবনে কি তা হালাল হয়ে যাবে?

কোরআনে কি বিশেষ কোন ভৌগলিক সীমা রেখার জন্য শীতিলযোগ্য? শূকরের মাংস খাওয়া ইসলামে নিষিদ্ধ করেছে। কোরআনে ঘোষণা এসেছে, তিনি তোমাদের ওপর হারাম করেছেন, মৃত্য জীব, রক্ত, শূকরের মাংস এবং সেসব জীব-জন্তু যা আল্লাহ্ ব্যতীত অপর কারো নামে উৎসর্গ করা হয়। (সূরা বাকারা : ১৭৩)

কোরআন আরও বলছে, বল, আমার নিকট যে ওহি পাঠানো হয়, তাতে আমি আহারকারীর উপর কোনো হারাম পাই না, যা সে আহার করে। তবে যদি মৃত কিংবা প্রবাহিত রক্ত অথবা শূকরের মাংস হয়। কারণ নিশ্চয় তা অপবিত্র। (আল-আনআম : ১৪৫)

বিশ্বাসী বা মুসলিমের জন্য আল্লাহর এ নির্দেশই যথেষ্ট। কেন হারাম করা হলো এই প্রশ্ন করার প্রয়োজন নেই। প্রকৃত গোলাম তো সেই, যে মনিবের আনুগত্য প্রশ্ন ছাড়াই পালন করে। আল্লাহর নির্দেশে মানুষের কল্যাণ রয়েছে।

আল্লাহর আনুগত্যে মুমিনের সফলতা ও কামিয়াবি রয়েছে। সুতরাং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই আমরা শূকর খাওয়া থেকে বিরত থাকবো। সেটা দেশ বা প্রবাস জীবনে কোন পার্থক্য নেই। জেনে শুনে শূকরের মাংস খাওয়া আমাদের জন্য নিষিদ্ধ এবং চরম অন্যায়।

কোরআনুল কারিম নয় খ্রিস্টান ধর্মগ্রন্থ বাইবেলও শূকর মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ। বাইবেলের পঞ্চম গ্রন্থ ‘ডিউট্যারনমী’ বলা হয়েছে, আর শূকর- কারণ তার খুর দ্বিখন্ডিত, এমনকি চিবিয়ে খায়, যাবর কাটেনা, ওটা অপবিত্র তোমার জন্য, তুমি এসব প্রাণীর মাংস খাবে না, শূকরের মৃতদেহও তুমি স্পর্শ করবে না। (ডিউট্যারনমী : ১৪: ৮) কোরআন ও বাইবেলের ভাষ্য অনুযায়ী শূকরের মাংস অপবিত্র।

উত্তর আধুনিক বিজ্ঞান কোরআন বুঝতে সহায়ক।
বিজ্ঞান বলছে, শূকরের মাংস খেলে মানুষের স্বাস্থ্যগতভাবে বেশ ঝুঁকির মুখোমুখি হয়। শূকরের মাংসে খুব বেশি পরিমাণ কোলেস্তেরল থাকে। অতিমাথায় কোলেস্তেরল থাকলে মানবদেশে শিরা-উপশিরা প্রবাহ আটকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। স্তন, রক্ত ইত্যাদি ক্যান্সার অক্রান্ত হতে পারে।

চিকিৎসক থেকে ধর্ম গবেষক খ্যাত ডা. জাকির নায়েক বলেছেন, শূকরের মাংস খেলে পেটে লম্বা আকৃতির ফিতা ক্রিমি বেড়ে ওঠতে পারে। এই কৃমির ডিম রক্ত প্রবাহে প্রবেশ করে এবং দেহের প্রায় সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গে ঢুকে পড়তে পারে। যদি ডিম মস্তিস্কে ঢোকে, তাহলে স্মৃতি ভ্রষ্ট হওয়ার সমোহ আশঙ্কা রয়েছে।

হৃদ-যন্ত্রের মধ্যে ঢুকলে বন্ধ করে দিতে পারে হৃদয়ন্ত্রক্রিয়া। চোখে ঢুকতে পারলে অন্ধত্বের কারণ, কলিজাতে ঢুকতে পারলে সেখানে মারাত্মক ক্ষতের সৃষ্টি করে। তার মানে এটা শরীরের যে কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কর্মক্ষমতাকে ধ্বংস করে দিতে পারে।

চিকিৎসা বিজ্ঞান শূকরের মাংসের আরও অনেক ক্ষতির বিষয়ে আলোচনা করেছে। ঘৃণার বিষয় হলো, শূকর প্রাকৃতিকভাবে অপরিচ্ছন্ন ময়লাপ্রিয়, নোংরা, ইতর ও অসভ্য প্রাণী। অলস, যৌনকাতর ও বিকৃতরুচির অধিকারী। মল-মূত্র-বিষ্ঠা খাওয়া তার খুব শখ।

শরীরে রোগজীবাণুতে ভরপুর। দুর্গন্ধ ও ময়লা-আর্বজনায় বসবাসে আগ্রহী। প্রাণিবিজ্ঞানীরা বলেন, শূকর চূড়ান্ত নির্লজ্জ। বহুগামিতা শূকরের স্বাভাবিক চরিত্র। নিজের সংগম সঙ্গীকে অন্যের কাছে ডেকে পাঠায় এই শূকর।

নোংরা ইতর ও চরম নির্লজ্জ প্রাণিকে মুখে তুলে নেওয়া, পেটে হজম করা কোনো রুচিবান মানুষের পক্ষে সম্ভব না। আমাদের ভাবনায় স্বচ্ছ আঙিনায় বোধ ও রুচির উদয় হোক। বিবৃতি ও আবর্জনা নিক্ষেপ হোক ডাস্টবিনে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here