আবহাওয়া অফিস বলছে, এ তাপমাত্রা বাড়ার সম্ভবনা নেই, আরো কমতে পারে। এতে আরো শীতে শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়াযর সম্ভাবনা রয়েছে।

unitednews24.comআদিল হোসেন তপু, ভোলা প্রতিনিধি :: ভোলায় শীতে কাপছে চনাঞ্চলের দরিদ্র মানুষ। শীত নিবারনে ব্যবস্থা না থাকায় চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে ওই সব মানুষের জন জীবনে। তবে সরকারীভাবে বেশ কিছু কম্বল বিতরন করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল।

শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায়র সাথে সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে ঠান্ডা, নিউমোনিয়া, সর্দি, কাশি, জ্বসহ শীতজনিত নানা রোগ। এতে শিশুরা ব্যাপকহারে আক্রান্ত হচ্ছে। জেলার হাসপাতালেগুলোতে এখন এসব রোগীদের ভীড়।

তবে আবহাওয়া অফিস বলছে, এ তাপমাত্রা বাড়ার সম্ভবনা নেই, আরো কমতে পারে। এতে আরো শীতে শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়াযর সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে, শীতের প্রকোপের কারনে ৫থেকে ৮জানুয়ারী পর্যন্ত গত ৩দিনে নিউমোনিয়াসহ নানা কারনে ৩টি শিশুর মারা গেছে বলে জানিয়েছে ভোলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: কুমার বিশ্বজিৎ পাল।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অর্ধশতাধিক শিশু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। যাদের মধ্যে ১৫ জন শিশু নিউমোনিয়া আক্রান্ত।

এছাড়াও জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে শতাধিক শিশু শীতজনিতসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।

ভোলার সিভিল সার্জন ডা: ফরিদ আহমেদ বলেন, শীতের কারনে হাসপাতালগুলোতে শিশু রোগীদের চাপ একটু বেশী। তবে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও উপকরন সরবরাহ রয়েছে। ডাক্তার ও নার্স তাদের সাধ্যমত চিকিৎসা দিচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার মূল ভূ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের মধ্যে হাজিপুর, রামদাসপুর, মেদুয়া, মদনপুর, মাঝের চর, চর জহির উদ্দিন, চর নাসরিন, কলাতলীর চর, ঢালচর, কুকরী-মুকরী, চর পাতিলা, সিকদারের চর,  কচুয়াখালীর চর, চর মমতাজ, ঢালচরসহ অন্ত:ত ২০/২২টি চরে ৩লাখের অধিক মানুষ বসবাস করেন। নদীর তীরবর্তী এলাকায় বসবাসকারী এসব মানুষ শীত কষ্টে দিন কাটাচ্ছে।

তবে সরকারীভাবে এসব চরগুলোতে তেমন শীত বস্ত্র বিতরন করা হয়নি। এতে তারা শীত নিবারনের কোন ব্যবস্থাই খুঁজে পাচ্ছেন না তারা। কেউ কেউ আগুন জ্বালিয়ে শীত কষ্ট থেকে বাচাঁর চেষ্টা করছেন। তবে তাতেও কাজ হচ্ছেনা তাদের।

চরফ্যাশনের ঢালচর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান কালাম পাটোয়ারী বলেন, এ ইউনিয়নে ৬হাজার দরিদ্র মানুষ বসবাস করছে। কিন্তু সরকারীভাবে মাত্র ৩৯টি কম্বল এসেছে। বৃহস্পতিবার অতিদরিদ্রদের মাঝে এ কম্বল বিতরন করা হয়। কিন্তু বরাদ্দ কম থাকায় বেশীরভাগ দরিদ্র মানুষেশর ভাগ্যে তা জুটেনি।

দৌলতখানের মেঘনার বিচ্ছিন্ন ইউনিয়ন হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান (ইউপি) চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেণ, আমার ইউনিয়নের দেড় হাজার দরিদ্র পরিবার রয়েছে। কিন্তু এ বছর শীতে সরকারী কিংবা বেসরকারী উদ্যোগে কোন শীকবস্ত্র বরাদ্দ হয়নি।

কারো ভাগ্যেই জুটেনি শীতের গরম কাপড়। দরিদ্র এসব মানুষ শীত কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। এদের কারোরই শীতের বস্ত্র কেনার সামাথ্য নেই।

এদিকে, সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে ভোলার মূল ভূ-খন্ড ও চরাঞ্চলে সামান্য কিছু শীতবস্ত্র বিতরন করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খবুই অপ্রতুল বলে মনে করছেন উপকূলের মানুষ। অধিকাংশ দরিদ্র মানুষের ভাগ্যে জোটেনি এসব বস্ত্র।

অপরদিকে, আগামী সপ্তাহে এ শীতের প্রকোপ আরো একধাপ  বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়ায় অফিস।

বরিশাল আবহাওয়ায় অফিসের সিনিয়র অবজারবার মো:ইউসুফ বলেন, বৃহস্পতিবার বরিশাল ডিভিশনে তাপমাত্রা ছিলো ১১দশমিক ৪। গত এক সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে।

গত সপ্তাহের শুরুতে তাপমাত্রা ছিলো ১৭ দশমিক ২।

তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহ জুড়ে তাপমাত্রা আরো কমে যাওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। এতে শীত বেড়ে যেতে পারে।

এ বিষয়ে ভোলার জেলা প্রশাসক মো: সেলিম রেজা বলেন, এ পর্যান্ত জেলার ৭টি উপজেলা ৮হাজার কম্বল বিতরন করা হয়েছে। আরো কম্বল বরাদ্দরে জন্য উধ্বর্ধন কর্তৃপক্ষের নিকট চিঠি পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই তা বিতরন শুর হবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here