জাবি : উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষক সমিতির ডাকা ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

শনিবার ভোরে শিক্ষকরা ক্যাম্পাসের পরিবহন চত্বরে জড়ো হয়ে ঢাকাগামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বাস বন্ধ করে দেন।

তবে শিক্ষক সমিতির নির্বাহী সদস্য শামসুল আলম সাংবাদিকদের বলেছেন, আমাদের দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পরিবহন যোগাযোগ বন্ধ রেখেছেন।

শিক্ষদের বাধার মুখে প্রশাসন ভবনে নিজেদের কার্যালয়ে ঢুকতে পারেননি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক এমএ মতিন ও আফসার আহমদ, নিবন্ধক আবুবকর সিদ্দিক, উপ-নিবন্ধক মোহাম্মদ আলীসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।

উপউপাচার্য অধ্যাপক আফসার সাংবাদিকদের বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনার কথা জানালেও শিক্ষক সমিতির নেতারা ঢুকতে দেননি।

সকাল সাড়ে ৭টায় কার্যালয়ে এসে বাধার সম্মুখীন হন বলে জানিয়েছেন নিবন্ধক আবু বকর সিদ্দিক।

শিক্ষকরা না যাওয়ায় বিভিন্ন অনুষদে ক্লাসও হতে দেখা যায়নি।

তবে ধর্মঘটের মধ্যে ক্লাস নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন ‘শিক্ষক মঞ্চ’।

সংগঠনের মুখপাত্র রায়হান রাইন বলেন, আমরা ক্লাস নেব, শ্রেণিকক্ষ তালাবদ্ধ থাকলে প্রয়োজনে শহীদ মিনারের পাদদেশে পাঠ দেব।

অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনকে কয়েক দফা সময় বেঁধে দেয়ার পর শনিবার থেকে সর্বাত্মক ধর্মঘটের ডাক দেয় শিক্ষক সমিতি। তাদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়েছে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করে আসা সাধারণ শিক্ষক ফোরাম।

অধ্যাপক আনোয়ার শিক্ষকদের কর্মসূচি প্রত্যাহারের আশা প্রকাশ করে ইতোপূর্বে বলেছেন, নয়তো চাকরি বিধি অনুযায়ী আমরা পদক্ষেপ নেব।

তিনি উপাচার্যের পদ থেকে সরে যেতে ইতোমধ্যে সম্মত হয়েছেন। তবে জানিয়েছেন, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ছাত্র সংসদ নির্বাচন এবং উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন দিয়ে তিনি তার আগে কর্মস্থল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যাবেন।

তাতে সম্মত না হয়ে উপাচার্যকে অবিলম্বে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছে শিক্ষক সমিতি।

আন্দোলনরত শিক্ষকদের অন্যতম নেতা অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, শিক্ষকদের হুমকি দিয়ে নৈতিকতার সবটুকু সীমা অতিক্রম করেছেন উপাচার্য।

ছাত্রলীগের একদল কর্মীর হাতে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের নিহত হওয়ার পর গত বছর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে শরিফ এনামুল কবির উপাচার্য পদ ছাড়লে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনকে উপাচার্যের দায়িত্ব দেয় সরকার।

পরে নির্বাচনের মাধ্যমে স্থায়ী হওয়া এই উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে আন্দোলনে নামে শিক্ষকরা।

শিক্ষক সমিতির আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয় অচল হয়ে পড়লে এই বছরের শুরুতে হাই কোর্ট এক আদেশে শিক্ষা কার্যক্রমে কোনো বাধা সৃষ্টি না করার নির্দেশ দেয়।

এরপর শিক্ষক ফোরাম নামে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষকরা। ওই আন্দোলনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা কাটাতে উদ্যোগ নেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর শিক্ষকরা আন্দোলন স্থগিত করলেও আশ্বাস বাস্তবায়ন না হওয়ার পর অভিযোগ তুলে পুনরায় আন্দোলনে নেমেছে শিক্ষকরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here