শিক্ষক ও সহপাঠীদের বুকে কালো ব্যাজ ধারণমুজাহিদুল ইসলাম সোহেল, নোয়াখালী প্রতিনিধি:: ক্যাম্পাসে আর কোন দিন ফিরবেনা নোয়াখালী বিজ্ঞানও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ফৌজিয়া মোসলেম সিলভী। ফৌজিয়াকে হারিয়ে সহপাঠীরা বারবার কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছে।সব চেয়ে কাছের বান্ধবী রিন্তি। রিন্তি সহপাঠীর কথা বর্ণনা করতে গিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে ছিলেন তিনি। পড়া লেখার পাঠ চুকিয়ে জীবন সংসার গড়ার কথা ছিলো তার।

কয়েকদিন আগে আংটি বদল হয়েছে এক শিক্ষকের সাথে,ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হলে ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে বাগদানের কথা ছিল। এরমধ্যে গত ৫ দিন আগে ফার্মেসি বিভাগের সেরা হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এম অহিদুজ্জামানের হাত থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট গ্রহন করছে ফৌজিয়া মোসলেম সিলভি।

রবিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাশ শেষে করে বাড়ী ফেরার পথে হাতিয়া কটেজের দক্ষিনে বাঁকে অটো থেকে ছিটকে পড়ে পেছন থেকে আসা পিকআপের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তার। এমন মৃত্যু যেন কেউ মেনে নিতে পারছে না। ফৌজিয়ার মৃত্যুতে পুরো নোবিপ্রবি পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে। ফৌজিয়ার মৃত্যুর খবরে পুরো ক্যাম্পাস মুহূর্তে নিরব হয়ে যায়। কেউই তার মৃত্যুর খবর মেনে নিতে পারছেনা।

ফৌজিয়ার বাড়ি নোয়াখালী সদর উপজেলার দত্তবাড়ী মোড়ে। তিনি মো: মোসলেম মিয়ার মেয়ে।

উল্লেখ্য অষ্টম ব্যাচের ছাত্রী ফৌজিয়া মোসলেম সিলভি এ বিভাগ থেকে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেছেন। বিভাগে তিনি ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে প্রথম হয়েছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুশফিকুর রহমান ও জনসংযোগ কর্মকর্তা ইফতেখার রাজু জানান, দুপুরে ক্লাস শেষে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইকে করে জেলা শহর মাইজদীতে ফিরছিলেন ওই ছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে এলাকায় সোনাপুর থেকে আসা একটি পিকআপভ্যান ইজিবাইকটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, নিহতের উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। পরে নিহতের মৃতদেহ পরিবারের লোকজনের কাছের হস্তান্তর করে রাতে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।

তার মুত্যুতে ক্যাম্পাসে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা কালো ব্যাজ ধরণ করেন। উপাচার্য ড.এম অহিদুজ্জামান ও শিক্ষক সমিতির নেতা,অফিসার্স এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ,নোবিপ্রবি ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বিভিন্ন শ্রেণি পেশা এবং আশে পাশের লোকজন সিলভীর পরিবারের সদস্যদেও সান্ত¦না দিতে তার বাড়িতে ছুটে যান।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here