যশোরের শার্শার ডিহি ইউনিয়ন ভুমি অফিসের কর্মকর্তার দুর্নীতিতে এলাকাবাসীর নাভিশ্বাস উঠেছে। তার দুর্ণীতির করালগ্রাসে পড়ে সর্বশান্ত হচ্ছে সাধারন মানুষ। বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ হওযা সত্বে সে বহাল তবিয়তে রয়েছে স্ব-স্থানে ৬ বছর ধরে।
অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, শার্শার খলিশাখালী গ্রামের আব্দুর রহমানের পুত্র মোমিনুল ইসলাম, জাহাংগীর হোসেন, আমিনুল ইসলাম, ফরিদুল ইসলাম খারিজ নিস্পত্তি করার জন্য ডিহি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে আবেদন করেন। দীর্ঘদিন ভূমি অফিসে ধরনা দেয়ার পরও তার খারিজ আবেদনটি নিস্পত্তি হয় ১১ হাজার টাকার বিনিময়ে। পরে ডিহি ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা শামীম আহমেদ ১১ হাজার টাকা নিয়ে খারিজ আবেদনটি নিস্পত্তি করে দিলেও ডিসিআর রসিদ দেয় নাই। এবং উক্ত জমির বকেয়া খাজনা পরিশোধের জন্য ৮ হাজার টাকা দিলেও সহকারী ভূমি কর্মকর্তা শামীম আহমেদ মাত্র ৭৩ টাকা ও ২০ টাকা মুল্যের দুটি রশিদ দেন। আর এসব উৎকোচের টাকা লেনদেন করা হয় ভূমি অফিসের বিশেষ কর্মচারীর মাধ্যমে। সাধারণ লোকজন এ ভুমি কর্মচারীদের খপ্পরে পড়ে প্রতিনিয়ত আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ।
সংশ্লিষ্ঠ সুত্রে জানা যায় উপজেলার ডিহি ভূমি অফিসে খারিজ (নামজারী), ভূমি উন্নয়নের অতিরিক্ত কর আদায়, খাজনা দাখিলা ও খাস জমি বন্দোবস্তসহ সব ক্ষেত্রেই ডিহি ইউনিয়নের প্রত্যেকটি মৌজার শত শত সাধারণ মানুষকে প্রতিনিয়ত চরম ভাবে হয়রানীর শিকার হতে হয়। তার চাহিদা মোতাবেক উৎকোচ না দিলে কাজ হয় না। এ ভূমি অফিসে রয়েছে কর্মচারী নামধারী কয়েকজন দালাল। এ সব দালালদের খপ্পরে পড়ে সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন আর্থিক ভাবেও। ভূমি সংক্রান্ত বিভিন্ন আইন কানুন না জানার কারনেই মুলত সাধারণ মানুষ এমন প্রতারনা ও হয়রানীর শিকার হচ্ছে।
আরো জানা যায়, খারিজ খতিয়ান ও নোটিশ জারির ক্ষেত্রে ১০ টাকা মুল্যের একটি কোট ফি’র প্রয়োজন হয় এবং ডিসিআর বাবদ সরকারী ফি প্রয়োজন ২’শ ৪৫ টাকা। কিন্তু গ্রামের সাধারণ মানুষের এসব বিষয়ে তেমন কোন ধারনা না থাকায় উক্ত ভূমি অফিসের কর্মকর্তা শামিম আহমেদ ও তার পৌষ্য কর্মচারীরা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে জমি খারিজের ফি নিয়ে থাকে ৫ হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। আর সংশিষ্ট জমি মালিকদের দলিলে কোন রকম জটিলতা থাকলে তখন টাকার অংক বেড়ে দাড়ায় দশ গুন।
সুত্র আরো জানায়, শার্শা খলিশাখালী গ্রামের আব্দুর রহমানে ৪ জন পুত্র মোমিনুল ইসলাম, জাহাংগীর হোসেন, আমিনুল ইসলাম, ফরিদুল ইসলাম খারিজ নিস্পত্তি করার জন্য ডিহি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ১০ নং চন্দ্রপুর মৌজার ১৭১ নং খতিয়ানের ৭০নং দাগের ৭৩ শতক জমি খারিজের জন্য আবেদন করেন। কয়েক মাস ঘোরানোর পর ডিহি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা শামীম আহমেদ ৬ হাজার টাকা নিয়ে খারিজ আবেদনটি নিষ্পত্তি করে। জমি খারিজের বিপরিতে ডিহি ভূমি অফিসের এই কর্মকর্তা শামীম আহমেদ উক্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে খাজনা পরিশোধ করবে বলে ৫ হাজার টাকার বিনেময়ে দুইটি খাজনা রশিদ প্রদান করে যার রশিদ নং ৮৩৯৭৬৫ / ৮৩৯৭৬৬। শুধু এদের কাছ থেকে নয়। একার প্রতিটি ভুমি মালিকের কাছ থেকে একই হারে উৎকোচ নিলেও উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা অজানা কারনে নিরব রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে শুধুই শামিম আহমেদ নয়। এ অফিসে চাকুরী প্রাপ্ত সকলেই দুর্নীতির সাথে জড়িত রয়েছে।
এ ব্যাপারে ডিহি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা শামীম আহমেদ-এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ৫ হাজার টাকা নেয়ার কথা শীকার করে বলেন, উপরী মহলে টাকা না দিলে সেখানকার স্বাক্ষর পাওয়া যায় না। তাছাড়া অভিযোগ সঠিক নয় বলে সে মোবাইল ফোন কেটে দেয়।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/ ইয়ানুর রহমান/শার্শা