একদিন কবি সভায়
শামসুদ্দিন হীরা

ইতিহাসের ধূলো উড়ে
চৈতির আম বাগানে
অস্পষ্ট ভেসে আসে
ঘোড়ার খুরের ধ্বনি
উত্তরের বরেন্দ্র জনপদে
প্রেম আর যুদ্ধের নানা বিভঙ্গ
গনতন্ত্র দেখতে দেখতে
নবাবীতে ফিরে যেতে ইচ্ছে করে।
রক্তের ভিতর শীতল হাওয়ায়
বিপ্লব আজ ম্যাড়মেড়ে সস্তা
তারচেয়েও সস্তা দেশপ্রেম।
অলৌকিক বার্তায় পৌঁছে গেলাম
কবিদের আনন্দ আয়োজনে
নির্জনতায়।
পাতার কোলাহলে
উর্বর মাটিতে
অন্তর্গত বৃক্ষরা বেড়ে উঠে
শেকড়ের শিরা
শাখা প্রশাখা স্নায়ু
ঘন পত্রসমষ্টি কান্ডে
পাতাদের হেলেদুলে
আহ্লাদি ভাবনা
উর্ব্বশি নারীর দেহের মাতম
আনমনে বসে আছি
তুমি ঘুরে বেড়িয়েছো
ফুলে ফুলে উচ্ছ্বলে
আনন্দে হেসেছো
বাঁশের মাচায়,পা ছড়িয়ে
বাগানে কাগুজি লেবুর ঘ্রাণ
হাত বাড়ালেই জুঁই
দক্ষিনে আমের অনন্ত সারি
পূর্বে নিগূঢ় প্রাচুর্যে গোলাপ
হেয়ালী কবির ছদ্মবেশে
থেকেছি আমি।
একা হতে গিয়েও
একা হতে পারছি না, জানো…
হ্যাংলামো বশে মুখ থেকে
চুল সরিয়ে দিই কোমল স্পর্শ ঠোঁটে
তুমি কেন রূপকথার গল্পের মতো
মেঘ হয়ে যাও?
অক্লেশে তুমি তুলে দিচ্ছো বল্কল,
ছায়া আর ঝরা পাতার নাচন
আমার নিশানা তখন বিষাদের পথ
সমস্ত কুয়াশা কান্নার আয়োজনে ব্যস্ত
সমস্ত কবি নিজস্ব মহিমায় মহিমান্বিত
আমার নির্জনতায় কপাট এঁটে
কবিদের কোলাহলে
আমি এক বিষন্ন বালক।
গানে, করতালে বাক্যালাপে
আনন্দের কলতান শেষে
যে যার প্রয়োজনে
সরে যায় অবশেষে।
প্রকৃতি পাগল রমনীরা
ফুল পাতায় খুনশুটি কাটে
ভাবুক পুরুষেরা লোমশ হাতে
বিভোর সিগারেট ফুঁকে,
গানের শিল্পীরা রৈ রৈ শব্দে
নৈঃশব্দ্য ভাঙানো গান গেয়ে উঠে
কিছু প্রাণ নীরব আর্তনাদে
জ্বরের প্রলাপ রাগে
খসখসে বেদনা জাগে।
তাবৎ উৎসবে অতল জলের তলে
ছুঁয়ে যায় আঙুলের ডগায়
ভেতরে উৎসারিত ঝরনা জলের মতো
প্রবাহিত হয় সমর্পিত নদীর ধারায়।
মধ্যাহ্ন ভোজ বসেছ পশরা সাজিয়ে
আগত কবিদের থোকা থোকা
মেলা বসেছে গল্প টিক্কা টিপ্পনিতে
নবীনদের উপেক্ষায় কেটেছে
অলস বেলা।
কিছু কবি শরীরে অহংকার মাখে
প্রবল অহংকারে কেউ কবি হয়ে উঠে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here