মুক্তিযুদ্ধের ৪০ বছর অতিবাহিত হলেও জীবন দিয়েও শহীদদের মর্যাদা পায়নি পাবনা জেলা পাড়ার শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলীর পরিবার।

জানা গেছে, ১৯৭১ সালে দেশে যখন পাক বাহিনী ঢুকে হত্যা, অগ্নিসংযোগ শুরম্ন করে তখন পাবনা শহরের জেলাপাড়া মহলস্নার আহেদ আলীর ছেলে আশরাফ আলী ও তার ১০ থেকে ১২ জন বন্ধু মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহনের সিদ্ধান্ত নেন। এর মধ্যেই তারা শহরের ফায়ার সার্ভিস এলাকায় পাকবাহিনীদের গাড়ীর উপর অজ্ঞাতস্থান থেকে বোমা নিক্ষেপ করে হামলা চালায়। দেশে যখন পাকবাহিনীর অত্যাচার চরমে তখন আশরাফ আলী ও তার বন্ধুরা শহরের জেলাপাড়া মহলস্নার বিহাড়ী বাড়ীতে গোপন বৈঠকে বসেন। তাদের গোপন বেঠকের খবর পাক বাহিনীরা জানতে পারে। ১৯৭১ সালের ১১ এপ্রিল বিকেল ৪টার দিকে পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা ভারী অস্ত্রসশস্ত্র নিয়ে ঐ বাড়ীটি ঘিরে ফেলে এবং সেখান থেকে আশরাফ আলী, তার ভাই আকবর আলী, আফছার আলী, মোশাররফ হোসেন, এডভোকেট শফিউদ্দিন, হারম্ননর রশিদ, নুরম্নল হক ও শফিউন্নবী সুর্যকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তাদের শহরের গোপালপুর তেমাথায় সারিবদ্ধ করে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করে এবং লাশগুলো ফেলে রেখে যায়। স্থানীয়রা ৮ শহীদের লাশ উদ্ধার করে গনকবর দেন।

সেদিনের শহীদদের একজন আশরাফ আলীর বিধবা স্ত্রী জালেকা খাতুন(৭৮) জানান, তার ৫ ছেলে ও ৪ মেয়ে নিয়ে স্বামী হারানোর বেদনা বুকে চাপা দিয়ে জীবনযাপন করছেন। তিনি আড়্গেপ করে বলেন, দেশের জন্য একসাথে একই দিনে তার স্বামী আশরাফসহ ৮ জন প্রান দিলেও দেশ স্বাধীনের ৪০ বছরেও তাদের পরিবার শহীদদের মর্যাদাটুকু পায়নি। কোন দিনই কেউ তাদের সনত্মানদের কোন খোঁজ খবর নেয়নি। বয়সের ভারে তিনি খুবই ক্লানত্ম। তারপরও জীবনের শেষ ইচ্ছা বলতে জানান, স্বামীর শহীদের মর্যাদাটুকু দেখা যাওয়া। শহীদ আশরাফ আলীর ছেলে পাবনা কলেজের প্রভাষক কিসমত আলী জানান, দেশের জন্য তার বাবাসহ একদিনে ৮জন পাকবাহিনীর হাতে শহীদ হয়েছেন। এজন্য তারা গর্বিত। কিন্তু বাবা যেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার মর্যাদাটুকু পান এজন্য সংশিস্নষ্ট দপ্তরের প্রতি তিনি জোর দাবী জানান।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/কলিট তালুকদার/পাবনা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here