ডেস্ক রিপোর্ট::  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলের সামনে থেকে সরে দোয়েল চত্বরের সামনে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। সোমবার (১৫ জুলাই) রাত ৯টার দিকে সাঁজোয়া গাড়িসহ (এপিসি) দুই শতাধিক পুলিশ সদস্য তাদের অবস্থান থেকে সরে আসেন।

বিষয়টি নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, কেউ যেন সংঘর্ষে লিপ্ত না হয় সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং আন্দোলনকারীদের পরামর্শ মতোই সরে আমরা নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান নিয়েছি।

তবে এখনই পুলিশ প্রটোকল ক্যাম্পাস থেকে প্রত্যাহার করা হবে কিনা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি এই কর্মকর্তা।

অপরদিকে এখনও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলের সামনে অবস্থান করতে দেখা গেছে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, বিভিন্ন হলের প্রভোস্ট, হাউস টিউটররাও অবস্থান করছেন। শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে হলে ফেরানোর জন্যও দফায় দফায় অনুরোধ করতে দেখা গেছে তাদের। তবে শিক্ষার্থীরা বারবারই তাদের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে অবস্থানের ব্যাপারে অনড় অবস্থা ধরে রেখেছেন। এর বিপরীতে পুলিশ ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যদের দোয়েল চত্বর মোড়ে সারিবদ্ধ অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।

একই সঙ্গে এই সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান।

তিনি বলেন, পরিস্থিতির স্বাভাবিক করার জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি।

আহত শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে প্রক্টর বলেন, কত শিক্ষার্থী আহত হয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান এখন আমরা বলতে পারি না। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আহত সব শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল বিকেল ৩টায় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ মিছিল এবং সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

সোমবার (১৫ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বরে কোটাবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদুল ইসলাম এই কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হামলা, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার ও কোটা বাতিলের এক দফা দাবিতে সারা দেশে আগামীকাল মঙ্গলবার বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এরপরও যদি কোটা বাতিল করা না হয় তবে পরে সারা দেশে অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

তিনি বলেন, আজ পরিকল্পিতভাবে বহিরাগতদের এনে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর থাকার পরও বহিরাগতরা কীভাবে হামলা করে? সরকার সহিংসভাবে এই আন্দোলনকে দমন করতে চাইছে। কোটা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা বলতে চাই অবিলম্বে এই বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীকে ছাত্র সমাজের কাছে দুঃখ প্রকাশ করতে হবে।

আগামীকালের আন্দোলনে সারা দেশের মানুষকে নেমে আসার আহ্বানও জানান তিনি।

এ সময় কোটা আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ বলেন, সারা দেশে মর্মান্তিকভাবে আমাদের ওপর হামলা চালানো হলো। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং প্রক্টর আমাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here