ডেস্ক নিউজ :: ভ্যাটিকান তার “ল্যাম্প অব পীস” পুরস্কার প্রদান করলো নোবেল লরিয়েট প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে। গত ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ইটালির আসিসিতে অবস্থিত “বাসিলিকা অব সেইন্ট ফ্রান্সিস”-এ প্রফেসর ইউনূসকে এই সম্মাননা দিলো ভ্যাটিকান। শান্তি ও সংহতি প্রতিষ্ঠায় উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য এই পুরস্কার দেয়া হয়ে থাকে।
“দ্য হোলি কনভেন্ট অব প্যাপাল বাসিলিকা অব আসিসি”র মুখপাত্র ও পরিচালক যোগাযোগ ফাদার এনজো ফরতুনাতো ২৮ জুন ২০১৯ থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অনুষ্ঠিত ৯ম সামাজিক ব্যবসা দিবসের উদ্বোধনী দিনে পোপ ফ্রান্সিসের প্রতিনিধি হিসেবে এই পুরস্কারের ঘোষণা দেন।
১৯৮১ সালে পোলান্ডের প্রখ্যাত ট্রেড ইউনিয়ন নেতা লেস ওয়ালেসাকে প্রথম এই পুরস্কার দেয়া হয়। পোপ দ্বিতীয় জন পল, দালাই লামা, কোলকাতার সেইন্ট তেরেসা এবং রাশিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মিখাইল গর্বাচেভকে ইতোপূর্বে এই পুরস্কার দেয়া হয়েছে। কলম্বিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোসকে তাঁর নিজ দেশের গৃহযুদ্ধ বন্ধে অবদানের জন্য ২০১৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের পাশাপাশি এই পুরস্কার প্রদান করা হয়।
সম্প্রতি আরো যে দু’জনকে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে তাঁরা হচ্ছেন জার্মানীর প্রেসিডেন্ট অ্যাঙ্গেলা মের্কেল ও জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ্। অ্যাঙ্গেলা মের্কেলকে এই পুরস্কার দেয়া হয় মানুষে-মানুষে সংহতি ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান প্রতিষ্ঠায় তাঁর উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য। জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ্কে মানবাধিকার, আন্তঃধর্ম সংলাপ ও মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান এবং সংঘাতপূর্ণ সিরিয়া থেকে দেশত্যাগকারী রিফিউজিদেরকে তাঁর দেশে আশ্রয়দানের জন্য এই পুরস্কার প্রদান করা হয়।
আপার প্যাপাল বাসিলিকা অব আসিসি-তে আয়োজিত একটি জাকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে নোবেল লরিয়েট প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। ভ্যাটিকানের পক্ষে প্রফেসর ইউনূসের হাতে “ল্যাম্প অব পীস” তুলে দেন হোলি কনভেন্ট এবং প্যাপাল বাসিলিকা অব আসিসির মাস্টার ফাদার মওরো গামবেত্তি। ভ্যাটিকান নেতৃবৃন্দ, রোমের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর ও অধ্যাপকগণ, ইটালির সকল এলাকা থেকে আগত ব্যবসায়ী নেতা এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ ছাড়াও বিপুল সংখ্যক তরুণ এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
তাঁর পুরস্কার গ্রহণসূচক ভাষণে প্রফেসর ইউনূস মানবজাতির সামনে তিনটি আসন্ন সংকট সম্বন্ধে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন: সম্পদের প্রবল ও ক্রমাগত কেন্দ্রীকরণ, পরিবেশের দ্রুত বিপর্যয়, এবং আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্সের উত্থান। তিনি এই বিপদগুলোর বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন যে, এই গুরুতর সংকটগুলো মোকাবেলায় এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নিতে না পারলে পৃথিবীতে মানবজাতির অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়বে।
“ল্যাম্প অব পীস” ফ্রান্সিসকান সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা সেইন্ট ফ্রান্সিস অব আসিসির সমাধির পাশে প্রজ্বলিত একটি কাঁচের তৈল প্রদীপের অবিকল প্রতিরূপ বা রেপ্লিকা।