ডেস্ক রিপোর্ট:: লিবিয়ার দেরনায় মারাত্মক বন্যার পরে ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি গাড়িকে শহরের একটি আবাসিক ভবনের ওপরে দেখা যায়। রোববারের ছবি
উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় গ্রিসের উদ্ধারকারী দলের চার সদস্যসহ ৭ জন নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক বন্যায় দেশটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়ার জন্য গ্রিক উদ্ধারকারী দলের ওই সদস্যরা দেশটিতে গিয়েছিলেন।
দুর্ঘটনায় আরও ১৫ জন গ্রিক উদ্ধারকর্মী আহত হয়েছেন। এছাড়া নিহত অন্য তিনজন একই লিবিয়ান পরিবারের সদস্য। সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্যা-বিধ্বস্ত শহর দেরনায় যাওয়ার পথে গ্রীক উদ্ধারকারী দলের চার সদস্য এবং লিবিয়ান এক পরিবারের তিন সদস্য রোববার সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন বলে লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন।
ওসমান আব্দুল জলিল টেলিভিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, রোববারের এই সড়ক দুর্ঘটনায় গ্রীক উদ্ধারকারী দলের আরও ১৫ জন সদস্য আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে সাতজনের অবস্থা গুরুতর। তিনি বলেন, লিবিয়ান পরিবারের দুজনের শারীরিক অবস্থাও গুরুতর।
অন্যদিকে গ্রীক সশস্ত্র বাহিনী বলেছে, চিকিৎসা কর্মীদের বহনকারী একটি বাস বিপরীত দিক থেকে আসা একটি গাড়ির সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। তবে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি তারা।
গ্রিসের সশস্ত্র বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘লিবিয়ার কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় ঘটনার কারণ ও পরিস্থিতি তদন্ত করা হচ্ছে। এছাড়া বেনগাজিতে কর্মীদের একত্রিত করতে এবং তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’
এছাড়া দুর্ঘটনায় গ্রীক উদ্ধারকারী দলের চার সদস্যের প্রাণহানির বিষয়ে আব্দুল জলিলের বিবৃতি সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রীক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে একটি কূটনৈতিক সূত্র বলছে, গ্রীক ওই উদ্ধারকারী দলে ১৬ জন সদস্য এবং তিনজন দোভাষী ছিলেন।
গত ১০ সেপ্টেম্বর শক্তিশালী ঝড়ের সময় লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর দেরনার পার্শ্ববর্তী দুটি বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার পর শহরটিতে সুনামির মতো বন্যার সৃষ্টি হয় এবং এতে হাজারও মানুষ প্রাণ হারায়। লিবিয়ান রেড ক্রিসেন্ট গত বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, দেরনা শহরে ভয়াবহ বন্যায় নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১১ হাজার ৩০০ জনে।
এছাড়া বন্যার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন আরও ১০ হাজারের বেশি মানুষ। নিখোঁজ এসব হাজারও মানুষের খোঁজে মরিয়া অনুসন্ধান চালাচ্ছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।