ডেস্ক রিপোর্ট::  রো‌হিঙ্গা সমস্যার সমাধান এবং আশ্রিত রো‌হিঙ্গা‌দের মিয়ানমা‌রে প্রত্যাবাস‌নে ক‌মিশন গঠন করার পরামর্শ দি‌য়ে‌ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ।

শনিবার (১৪ অক্টোবর) ‘রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশ-মায়ানমার সম্পর্ক : আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এ পরামর্শ দেন তিনি।

অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ ব‌লেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিকভাবে রো‌হিঙ্গা ইস্যুতে কাজ করার কিছু মানুষ প্রয়োজন। একটা কমিশনও গঠন করা যেতে পারে। যারা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন লক্ষ্যে ভিন্ন ভিন্ন সম্ভাবনাকে আমলে নিয়ে কাজ করে যাবে।

তি‌নি ব‌লেন, মিয়ানমা‌রের জান্তা সরকার এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যার ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে কোনো না কোনো সংকট প্রয়োজন। দশকের পর দশক ধরে জান্তা সরকার দেশটি পরিচালনা করার ফলে আর কোনো প্রতিষ্ঠান বা সিভিল সোসাইটি দাঁড়াতে পারেনি, যারা মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করতে পারে।

রোহিঙ্গাদের ইতিহাস, সংকট, সভ্যতা ও রোহিঙ্গা বিষয়ে বাংলাদেশ-মায়ানমার সম্পর্কে আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে গবেষণা করেছেন মেজর জেনারেল ড. নাঈম আশফাক চৌধুরী। দীর্ঘ আট বছরে করা গবেষণাটি বই আকারে প্রকাশ করেছে আল হামরা প্রকাশনী।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের সম্মানীয় ফেলো ফারুক সোবহান বলেন, রোহিঙ্গারা পৃথিবীর সবচেয়ে নির্যাতিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে অন্যতম। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ধীরে ধীরে কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে উঠছে। আমরা যে দেশগুলো সবচেয়ে বড় বন্ধু বলে মনে করি, যেমন ভারত, চীন, রাশিয়া। তাদের সবারই মায়ানমারে নিজ নিজ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় রয়েছে। ফলে প্রত্যাবাসন ইস্যুতে বাংলাদেশের পক্ষে তাদের দৃশ্যমান অবস্থান দেখা যাচ্ছে না। এই বন্ধু রাষ্ট্রের উল্লেখযোগ্য সহযোগিতা ছাড়া, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ একা কতটুকু কি করতে পারবে, সেটা একটা বড় প্রশ্ন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান তাসমিয়া পারসুভ বলেন, রোহিঙ্গাদেরকে নিয়ে এটাই সম্ভবত প্রথম গবেষণা। আন্তর্জাতিক বিভাগের একজন শিক্ষক হিসেবে আমি মনে করি, এই বইটি থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী সম্পর্কে একটি সামগ্রিক ধারণা পাওয়া যাবে।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইতিহাস, সংকট, সংকটের কারণ এবং সম্ভাব্য সমাধান কি হতে পারে; এসব বিষয়গুলো বইতে গভীর ভাবে উঠে এসেছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, রাষ্ট্র বিজ্ঞানসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ক শিক্ষার্থীতো বটেই, এ বিষয়ে যারা কাজ করছেন বা করবেন তাদের জন্যও এই বইটি অত্যন্ত সহায়ক হবে।

অনুষ্ঠানে বইয়ের লেখক মেজর জেনারেল ড. নাঈম আশফাক চৌধুরী বলেন, গবেষণাটি সম্পন্ন করতে আমার আট বছর লেগেছে। দীর্ঘ সময় জুড়ে যারা আমাকে বিভিন্ন সময়ে গবেষণায় সাহায্য করেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

বইয়ের প্রকাশক খান মোহাম্মদ মোরসালীন বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে কোনো বাংলাদেশির এটিই প্রথম গবেষণা প্রকাশিত বই। মানব সভ্যতার এমন ইতিহাস কাগজে তুলে রাখতে পারা যেকোনো প্রকাশকের জন্য প্রশান্তির।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here