ডেস্ক রিপোর্ট::  সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের কারণে গত কয়েকদিন ফুটবলবিশ্ব বুঁদ হয়েছিল মেসি বন্দনায়। অন্যদিকে অনেকেই বলতে শুরু করেছিলেন, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো অধ্যায় ফুরিয়ে যাওয়ার কথা! কিন্তু সিআরসেভেন যে এখনই ফুরিয়ে যাননি, সেটার প্রমাণ দিলেন গতরাতেও।

শনিবার রাতে কিং ফাহাদ স্টেডিয়ামে আরব ক্লাব চ্যাম্পিয়ন্স কাপের ফাইনালে আরও একবার নিজের জাত চেনালেন ৩৮ বছরের এই ‘তরুণ’। জোড়া গোল করে তার ক্লাব আল-নাসরকে দিলেন প্রথমবার এই লিগ জয়ের স্বাদ। তাও আবার ৯ জনের দল নিয়ে।

গত মৌসুমে সৌদির ক্লাব আল নাসরে যোগ দেওয়ার পর দেশটির এক নম্বর লিগ সৌদি প্রো-লিগ খেলেছিলেন রোনালদো। তবে চেষ্টা করেও ক্লাবকে শিরোপা জেতাতে পারেননি। রানার্সআপ হয়েছিল আল-নাসর। কিন্তু এবার আর সে ভুল করেননি এই পর্তুগিজ তারকা। তার জোড়া গোলে আল হিলালকে ২-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তুলেছে আল নাসর।

আল হিলালকে এশিয়ার সেরা ক্লাব বললেও অত্যুক্তি হবে না। যারা গতবার ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছিল রিয়াল মাদ্রিদের বিরুদ্ধে।

শনিবার রাতে আল হিলালের বিরুদ্ধে প্রথমার্ধেই এগিয়ে যেতে পারত আল-নাসর। সাদিও মানে, সেকো ফোফানা ও মার্সলো ব্রোজোভিচের সব প্রয়াস রুখে দেন ৬ ফুট ২ ইঞ্চির গোলিকপার মহম্মদ আল-ওয়েস। কাতার বিশ্বকাপে সৌদি আরব ২-১ গোলে হারিয়ে দিয়েছিল মেসির আর্জেন্টিনাকে। এই আলওয়েসই ছিলেন সেই জয়ের নায়ক। ১৫টি শট রুখে দিয়েছিল তার বিশ্বস্ত হাত।

আজকের খেলায় তার সেই সাহসিকতায় প্রথমার্ধ থাকে গোলশূন্য। দ্বিতীয়ার্ধের ছয় মিনিটের মধ্যে ম্যালকমের গোলে এগিয়ে যায় আল হিলাল। ফ্লায়িং হেডে অসাধারণ গোল করার পর উদযাপনটাও করেন খানিকটা রোনালদোকে ব্যঙ্গ করে। কর্নার ফ্ল্যাগের সামনে গিয়ে রোনালদোর স্টাইলে সেলিব্রেশন করেন। রোনালদো কিছুটা দূর থেকে সবটা হজম করেছেন।

আচমকা লাল কার্ড পেয়ে ৭১ মিনিটে আল নাসর ১০ জনের দলে পরিণত হয়। ডিফেন্ডার আল আমরি লাল কার্ড পেয়ে বসেন। তবে সেই শোককেই যেন শক্তিতে রূপান্তরিত করে আল নাসর। ম্যাচের ৭৪ মিনিটে গোল করে ম্যালকমকে উত্তরটা দিয়ে দেন রোনালদো। দলকে ১-১ গোলে সমতায়ও ফেরান। উদযাপনের সময় মুখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দেন, সমালোচকরা ‘মুখটা বন্ধ রাখ’। এই গোলের পরেই আল নাসরের আরেক ডিফেন্ডার নাওয়াফ বুসাল লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। ফলে নয় জনের দলে পরিণত রোনালদো বাহিনী।

কিন্তু তাতেও যেন বিন্দুমাত্র দমে যাননি সিআর সেভেন। আরও ভয়ংকর আকার ধারণ করে তাদের আক্রমণভাগ। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে ক্রসবারের রিবাউন্ড থেকে একেবারে ‘বাঘের’ মতো ঝাঁপিয়ে গোল করেন রোনালদো। ১১৫ মিনিট পর্যন্ত রোনালদো মাঠে থেকে জয় নিশ্চিত করেই আসেন। ১২২ মিনিট পর্যন্ত খেলা হয়েছিল। কিন্তু মাথায় ছোট্ট চোট লাগার জন্য তাকে আর মাঠে রাখার ঝুঁকি নেয়নি আল নাসর। কারণ দু’দিন পরেই শুরু হবে সৌদি প্রো লিগ। রোনালদো আবারও বুঝিয়ে দিলেন- ফুরিয়ে যাননি, বিস্ময় হয়ে এখনো পুরো মাঠ দাপিয়ে বেড়ানোর ক্ষমতা রাখেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here