বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হাজার কোটি ডলারের নিচে নেমে আসায় অর্থনীতিতে এক ধরনের চাপ সৃষ্টির আশংকা করছেন বিশ্লেষকরা।
তাঁদের মতে, রপ্তানি কমে আমদানি বেড়ে যাওয়াসহ বেশ কিছু কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
তবে এখন যে রিজার্ভ আছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেটাকে সন্তোষজনক বলে মনে করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৯৬০ কোটি ডলারে, যা দিয়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব নয়।
তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি নেওয়ার কারণে রিজার্ভের উপর চাপ থাকবে না।
অর্থনীতিবিদদের অনেকেই অবশ্য এমনটা মানতে রাজি নন।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, সংকোচন নীতির কারণে রিজার্ভের ওপর চাপ পড়বে না, এমন বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়।
এর কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, সংকোচন মুদ্র্রানীতি বাস্তবায়ন হচ্ছে না।
এছাড়াও তিনি বলেছেন, ভাড়ায় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ক্ষেত্রে জ্বালানি তেল আমদানির মাত্রা বেড়েছে।
আমদানি বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি রিজার্ভের উপর চাপ সৃষ্টির অন্যতম একটি কারণ বলে তিনি মনে করেন।
কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী দাবি করেছেন, রিজার্ভের ওপর চাপ থাকবে না।
আশংকিত কিংবা আতংকিত হওয়ার মতো কিছু হয়নি বলেই তিনি মনে করেন।
সিদ্দিকী জানান, সেপ্টেম্বর মাসে ইউরোপীয় অভিন্ন মূদ্রা ইউরোসহ বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রা এবং সোনার দাম কমে যাওয়ায় রিজার্ভ কিছুটা কমেছে।
সেটাকে নেতিবাচকভাবে দেখার কিছু নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তাই বর্তমান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সন্তোষজনক বলেই দাবি করছে।
কিন্তু মির্জা আজিজুল ইসলাম মনে করেন, আমদানি ব্যয় এমুহুর্তে কমিয়ে আনা সম্ভব নয়।
সেখানে তিনি সরবরাহ বাড়ানোর উপর জোর দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, সরবরাহের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়ায় বৈদেশিক সহায়তার অর্থ ছাড় করানোর ব্যাপারেও অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হচ্ছে না। এর সাথে কমেছে রপ্তানি।
তিনি মনে করেন, রেমিটেন্স এখন আগের তুলনায় কিছুটা বেশি থাকলেও সব মিলিয়ে রিজার্ভের উপর চাপ থাকবে।
জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী বলেন, এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের আমদানি বিল পরিশোধ করার বিষয়টিও রিজার্ভ কমে যাওয়ার একটি কারণ হতে পারে।
কিন্তু আমদানি ব্যয় কমে আসবে এবং রিজার্ভ বেড়ে যাবে বলে তিনি আশা করেন।
অর্থনীতিবিদদের অনেকেই অবশ্য বলছেন, এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় এমুহুর্তে সরবরাহ বাড়ানো অর্থাৎ বৈদেশিক সহায়তার অর্থ বেশি করে ছাড় করানো এবং রপ্তানি বাড়ানোর ওপর জোর দিতে হবে।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/ঢাকা