লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার (চরআবদুল্যাহ) ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত একজন মহিলা মেম্বারকে অপহরণ ও ধর্ষণ ঘটনার প্রতিবাদে (আজ) সোমবার উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনষ্ঠিত হয়। উপজেলা ভূমিহীন সমিতি এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। এসময় ঘটনার সাথে অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি করে বক্তব্য রাখেন বেসরকারি সংস্থা নিজেরা করির রামগতি অঞ্চল সভাপতি ফকরুল আলম সেলিম, কর্মসুচি সংগঠক মমতাজ বেগম, ইদ্রিছ আলী, সমাজ সেবক জামাল উদ্দিন, ভূমিহীন নেতা মোঃ মোস্তফা, সুজাতা রানী দাস, (নির্যাতিত মেম্বারের বোন) ডলি আক্তার প্রমুখ। কয়েক’শ নারী পুরুষ ওই বিক্ষোভ সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন। পরে একই দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর ভূমিহীন সমিতির পক্ষে একটি স্মারকলিপি রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রদান করা হয়। এদিকে মামলা দায়েরের পর অভিযুক্ত আবদুল খালেক ও তার লোকজনের হুমকির মুখে ধর্ষণের শিকার ওই মহিলা মেম্বার নিজ এলাকায় যেতে পারছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পুলিশ, এলাকাবাসী ও ধর্ষণের শিকার ওই মহিলা মেম্বারের (নাজমা বেগম) সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ২৪ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকালে সিএনজি চালিত অটো-রিক্সায় করে (স্থানীয় রামদয়াল বাজার থেকে উপজেলা সদর আলেকজান্ডারবাজার এলাকায়) তারা (খালেক মেম্বার ও মহিলা মেম্বার) তাদের ইউনিয়ন পরিষদে যাচ্ছিল। যাওয়ার পথে খালেক মেম্বার ওই মহিলা মেম্বারের নাকে-মুখে একটি রুমাল চেপে ধরলে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। ওই দিন রাতেই জ্ঞান ফেরার পর মহিলা মেম্বার বুঝতে পারেন অজ্ঞাত স্থানে একটি আধা-পাকা ঘরে তিনি রয়েছেন। সেখানে চার দিন আটকে রেখে খালেক মেম্বার অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোরপুর্বক তাকে বিভিন্ন সময়ে ধর্ষণ করে।

মহিলা মেম্বার আরও বলেন, চট্রগ্রামের মিরসরাই উপজেলার নায়েরপুর কলঘর এলাকায় তাকে আটকে রাখা হয়েছে বুঝতে পেরে তিনি গত ২৭ নভেম্বর তার অবস্থানের কথা কৌশলে মোবাইলফোনে বাড়িতে পরিবারের লোকজনকে জানান। ওইদিনই সন্ধ্যায় মিরসরাই থানার পুলিশ ও তার পরিবারের লোকজন তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করেন।

এঘটনায় খালেক মেম্বারসহ চার জনকে অভিযুক্ত করে রামগতি থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। (চরআবদুলস্নাহ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড নির্বাচিত) অভিযুক্ত মেম্বার মোঃ আবদুল খালেক সহ অন্যরা পলাতক রয়েছে।

মামলার বাদি (মহিলা মেম্বারের স্বামী নুরুল আমিন লিটন) জানান, আসামী খালেক মেম্বার এবং তার লোকজন মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে। এতে করে তারা এলাকায় যেতে পারছেন না।

এদিকে অভিযুক্ত খালেক মেম্বারের বক্তব্য জানতে ফোন করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় জেনে ব্যসত্ম আছেন বলে ফোনলাইন কেটে দেন।

স্থানীয় (চরআবদুল্যাহ) ইউপি চেয়ারম্যান (মোঃ বেলাল) ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এব্যাপারে দুই দফায় তার পরিষদের বৈঠক হয়েছে। দুইজনই পরিষদের সদস্য বিধায় বিপাকে পড়েছেন। ঘটনার জন্য তীব্র নিন্দা প্রসত্মাব আনা হয়েছে। এছাড়া বিষয়টি ষ্পর্ষকাতর এবং বর্তমানে মামলার অধীনে রয়েছে। তিনি সুষ্ঠু তদনত্মপূর্বক সঠিক বিচার দাবি করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রামগতি থানার এসআই মাখন লাল রায় জানান, আদালতের নির্দেশে ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা ও জবানবন্দি রেকর্ড সম্পন্ন করা হয়েছে, ডাক্তারি পরীড়্গার রিপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি। নির্যাতনের শিকার মহিলা মেম্বারকে তার বোনের জিম্মায় দেয়া হয়েছে। অভিযুক্তদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/মিজানুর রহমান মানিক/লক্ষীপুর

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here