রাজশাহী মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র নাদিমুজ্জামান সাদকে অপহরণের পর গলাকেটে হত্যার ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে মহানগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোকাররম হোসেন খানকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে। এদিকে নাদিমুজ্জামান সাদকে অপহরণের পর জবাইয়ের ঘটনায় ৩ ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে রাজপাড়া থানা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার রাতে আরএমপি কমিশনারের নির্দেশে রাজপাড়ার ওসিকে ক্লোজড করা হয়। নির্ভোরযোগ্য সুত্রে জানা যায়, রাজপাড়ার ওসির বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে নানা অভিযোগ ছিল। এর আগে মহানগরীর একটি হত্যাকা-ের ঘটনায়ও তার অবহেলা প্রকাশ পেয়েছে। সাদের লাশ উদ্ধারের সময় নিহতের স্বজনদের রোষানলে পড়েন রাজপাড়া থানার ওসি মোকাররম হোসেন। স্বজনরা অভিযোগ করেন, এই ঘটনায় ১৯ জানুয়ারি মহনগরীর রাজপাড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করলেও পুলিশ কোনো তৎপরতা দেখায়নি। এমনকি সাদের স্বজনদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার পর্যনত্ম করা হয়নি। পরে নিরম্নপায় হয়ে গত ২৩ জানুয়ারি তারা র‌্যাবকে বিষয়টি জানান। এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষক শরিফুল ইসলামের ভাই তৌফিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় প্রায় একই ঘটনা ঘটে। গত বছর ২২ অক্টোবর দুপুরে মহানগরীর বুলনপুর চর থেকে রাজপাড়া থানা পুলিশ তৌহিদুল ইসলামের (৩৮) লাশ উদ্ধার করে। নিহতের বড় ভাই শফিকুল ইসলাম ওই দিন দুপুরেই রাজপাড়া থানায় কয়েকজন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। কিন্তু তিনি প্রায় মাস অতিবাহিত হলেও রাজপাড়া থানার ওসি এ ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এই ঘটনায় র‌্যাব সদস্যরা গত ২০ জানুয়ারি দুইজনকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের রাজপাড়া থানায় সোপর্দ করা হয়। পুলিশের ওই সূত্রটি জানায়, ওসির কারণে পর পর দুইটি হত্যাকা-ের ক্লু উদঘাটন ও সংশিস্নষ্ট আসামিদের গ্রেফতার নিয়ে কালক্ষেপণে ইমেজ সংকটে পড়ে আরএমপি।

এদিকে কলেজছাত্র সাদ হত্যাকান্ডের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত তিন বন্ধু কলেজছাত্র অনিক, মাসুদ ও বিপুকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজপাড়া থানা পুলিশ তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানায়। পরে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। এর আগে সাদকে অপহরণের পর জবাইয়ের ঘটনায় আটক ৩ ছাত্রের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ছুরি ও একটি কম্বল উদ্ধার করে মহানগরীর রাজপাড়া থানা পুলিশ। ওই ছুরি দিয়েই সাদকে জবাই করা হয়েছিল।

গত বুধবার বিকেলে মহানগরীর মঠপুকুর এলাকার একটি বাড়ির সেফটি ট্যাংক থেকে কলেজছাত্র সাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশে তারা সাদকে অপহরণ করেছিল। কিন্তু পরে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সামাল দিতে না পেরে সাদকে হত্যা করে। এক পর্যায়ে লাশ গুম করতে ওই সেফটি ট্যাংকের মধ্যে ফেলে দেয়। পুলিশ জানায়, এই কাজে তারা ৫ বন্ধু ছিল। অপর ২ বন্ধু সুইট ও কয়েলকে আটকের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলছে। অচিরেই তাদের আটক করা সম্ভব হবে।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/আকবর হোসেন/রাজশাহী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here