রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকরির কোটা নিয়ে সরকারদলীয় ছাত্রসংগঠন ছাত্র লীগ ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল আনুমানিক  পৌনে ১২টার দিকে হাসপাতাল চত্ত্বরে এই ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে ছাত্র লীগ অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাশ বর্জন পালন করছে। অন্যদিকে মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্র লীগ সভাপতি আশফাকুল হক খন্দকার পুলক সহ হামলাকারিদের গ্রেফতারের দাবিতে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে। নির্ধারিত সময়ে গ্রেফতার করা না হলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল অচল করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে কর্মচারী পরিষদ। এনিয়ে হাসপাতাল ও কলেজ ক্যাম্পাসে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানান, বৃহস্পতিবার সকাল আনুমানিক পৌনে ১২টার দিকে মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্র লীগ মিছিল নিয়ে নিজ সংগঠনের নামে শ্লোগান দিয়ে হাসপাতালে প্রবেশ করার চেষ্টা চালায়। এতে কর্মচারীরা বাধা দিলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এই সংঘর্ষে তাদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। সকল কর্মচারী একজোট হলে ছাত্র লীগ পিছু হটে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হন। ছাত্র লীগের দাবি তাদের সংগঠনের বেনজামিন, সজীব, রুমেল, রানা, রাকিবসহ ৭জন আহত হয়েছে। অন্যদিকে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণী সংগ্রাম পরিষদের দাবি মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্র লীগ সভাপতি পুলকের নেতৃত্বে তাদের উপর হামলা চালানো হয়। এই হামলায় তাদের ৫ জন আহত ও ৩ জন লাঞ্চিত হন। এদের মধ্যে বাবু মজুমদার, হুমায়ুন কবির কামাল হোসেন,আকমল, আজমল আহত ও লাঞ্চিত হয়েছেন মেডিকেল পরিচালকের পিএ রুহুল আমিন, তৃতীয় ও চতুর্থ কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের সচিব আনিসুল হক ও হাসপাতাল শাখার সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান। এনিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছাড়িয়ে পড়ে।

এদিকে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিক্ষদ্ধ কর্মচারীরা পরিচালকের কার্যালয় ঘেরাও করে পুলক ও হামলাকারিদের গ্রেফতারের দাবি জানায়। এসময় সেখানে পরিচালক ছিলেননা। জানা গেছে, তিনি এখন ঢাকায় অবস্থা্‌ন করছেন। পরে তারা মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষের কার্যালয় ঘেরাও করে তাঁকে স্মারক লিপি দেন। এসময় তারা দাবি করেন, পুলকের নেতৃত্বে ছাত্র লীগের শ্লোগান দিয়ে বহিরাগতরা কর্মচারীদের উপর হামলা করেছে। হামলার পর মেডিকেল পূর্ব গেটের গ্যাদরা শাহীন ও ম্যাক্স তাদের হুমকি দিয়ে গেছে। তাদের দাবি এর কলকাঠি নাড়ছেন ডা. চন্দন। তারা কর্মচারী নিয়োগ কোটায় ১০টি দাবি করেন। একারণে মেডিকেলে উদ্ভুত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তারা ২৪ ঘন্টার মধ্যে ছাত্র লীগের পুলকসহ বহিরাগতদের গ্রেফতার করা না হলে হাসপাতাল ও কলেজ অচল করে দেয়া হবে বলে হুশিয়ারী দেন।

এব্যাপারে ছাত্র  লীগ সভাপতি পুলক বলেন, প্রতিদিনের মতো আমরা মিছিল করছিলাম। বিনা উসকানীতে বিএনপি জামাত সমর্থিত কর্মচারীরা তাদের উপর হামলা করেছে।

এঘটনার প্রতিবাদে গতকাল থেকে ছাত্র লীগ মেডিকেল কলেজে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাশ বর্জন চলছে।

মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ ডা. প্রফেসর আব্দুর রউফ বিক্ষুদ্ধ কর্মচারীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, কলেজে সকল ধরনের ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, নিয়ম বহির্ভূত কাজ করলে মেডিকেল প্রশাসন এর দায় দায়িত্ব নেবেনা। অন্যায়ের সঙ্গে কোন আপোষ নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি একাডেমিক কাউন্সিলে বৈঠকে এবিষয়ে সিন্ধান্ত নেয়ার কথা জানান।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/জহুরুল ইসলাম জহির/রংপুর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here