মুজাহিদুল ইসলাম সোহেল, নোয়াখালী প্রতিনিধি ::
নোয়াখালীতে বেগমগঞ্জে যৌতুকের টাকার জন্য নাজমা আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধূর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় ৪জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চিকিৎসক জানিয়েছেন তার শরীরের ২৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। নাজমা আক্তার চৌমুহনী পৌরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ডের হাজীপুর এলাকার রুস্তম ড্রাইভার বাড়ির মো.ইউসুফের মেয়ে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, গৃববধূর স্বামী মো.রাসেল, শ্বশুর ফখরুল ইসলাম, শাশুড়ি সফুরা বেগম ও দেবর মামুন।  
রোববার (১২ নভেম্বর) বিকেলে আসামিদের নোয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়।এর আগে, একই দিন ভোর রাতের দিকে বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মুজাহিদপুর গ্রামের উজির আলী জমাদার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।  গতকাল শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার মুজাহিদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী নাজমা অভিযোগ করে বলেন, পাঁচ বছর আগে উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মুজাহিদপুর গ্রামের সিএনজি চালক মো.রাসেলের সঙ্গে  পারিবারিক ভাবে তার বিয়ে হয়। আমাদের সংসারে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে আমার স্বামী রাসেল বিভিন্ন সময় যৌতুকের টাকার জন্য সংসারে কলহ করত। কিছু দিন আগে সে তার সিএনজি চালিত অটোরিকশাটি বিক্রি করে দেয়।
তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, গত ৬ নভেম্বর নতুন একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা কেনার জন্য দুই লক্ষ টাকা আমার বাবার বাড়ি থেকে এনে দেওয়ার জন্য সে আমাকে বাবার বাড়িতে পাঠায়। শনিবার দুপুরের দিকে সে আমার কাছে টাকা চেয়ে ঘরের জিনিসপত্র ভাঙতে চেষ্টা করে। ওই সময় আমি বাধা দিলে আমার শ্বশুর-শাশুড়ির উপস্থিতিতে রাসেল আমার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে আমার চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে আমাকে উদ্ধার করে প্রথমে বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।  সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সন্ধ্যার দিকে আমাকে ২৫০ জন্য বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম বলেন, তৈল জাতীয় পদার্থ দিয়ে শরীরে আগুন দেওয়া হয়েছে। তার শরীরের ২৫ শতাংশ আগুনে পুড়ে গেছে।
বেগমগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমেনা বেগম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।  তিনি বলেন, এ ঘটনায় যৌতুক আইনে মামলা নেওয়া হয়েছে। আসামিদের ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে নোয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়।  পরে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here