স্টাফ রিপোর্টার :: রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণের পর ঢাকা থেকে পালিয়ে যায় ধর্ষক মজনু। কিন্তু মোবাইল ফোন বিক্রির টাকা ফেরত নিতে আবার ঢাকায় এসে গ্রেপ্তার হয় সে।

র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার মজনুকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় সে এই ঘটনা ঘটানোর পরে ভিকটিমের মোবাইল ফোন অরুনা নামের এক নারীর কাছে বিক্রি করে আত্মগোপনে চলে যায়। সে প্রথমে এয়ারপোর্ট রেলস্টেশন এলাকায় চলে যায়। এরপর সেখান থেকে নরসিংদী রেলস্টেশনে চলে যায়। পরে আবারও ঢাকায় এসে বনানী রেলস্টেশনে আত্মগোপনে থাকে।’

র‍্যাব জানায়, সর্বশেষ সে বনানী থেকে শেওড়াতে ওই নারীর কাছ থেকে মোবাইল বিক্রির টাকা নিতে যায়। আর সেখান থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

মজনুকে গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, ‘রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা ইউনিভার্সিটির একজন শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি অজ্ঞাত মামলা করা হয়। ঢাকার সমস্ত ব্যাটালিয়ন আমরা একযোগে কাজ শুরু করি। এরই ধারাবাহিকতায় এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্রের ভিত্তিতে আমরা আজ ভোর ৫টায় ঢাকার শেওড়া রেলক্রসিং থেকে এই ধর্ষক, নরপিশাচ মজনুকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই।’

তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক স্বীকারোক্তিতে সে বলেছে আমাদের কাছে, সে একজন সিরিয়াল রেপিস্ট। সে বিভিন্ন সময় প্রতিবন্ধী ও ভিক্ষুক মহিলাকে নানাভাবে ধর্ষণ করেছে। সে মাদকাসক্ত এবং সে নিরক্ষর। ১২ বছর আগে সে ট্রেনে যাওয়ার সময় ট্রেন থেকে পড়ে তার দাঁত ভেঙে যায়। তার দাঁত ভাঙার বিষয়টি আমাদের কাছে একটু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

ব্যক্তি জীবনে মজনু বিবাহিত ছিলেন এবং স্ত্রী মারা যাওয়ার পর তিনি নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন জানিয়ে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘তার (মজনু) স্ত্রী মারা যাওয়ার পর সে নানা ধরনের অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে। তার বাবা মৃত মাহফুজুর রহমান। তার মা জীবিত রয়েছেন। তবে বর্তমানে তার বাড়ির সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ নেই।’

ধর্ষণের ঘটনায় কোনো অনুশোচনা হচ্ছে কিনা- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, ‘সে (মজনু) পুরোপুরি নির্বিকার। প্রথম ধরা পড়ার পরই সে সবকিছু স্বীকার করে নিয়েছিল। সে ওই ছাত্রীকে কয়েকবার হত্যার চেষ্টা করেছিল বলেও সে স্বীকার করে নেয়।’

গত রোববার সন্ধ্যায় কুর্মিটোলায় ধর্ষণের শিকার হন ঢাবির ওই ছাত্রী। তার দেওয়া চেহারার বর্ণনা অনুযায়ী, ধর্ষকের একটি স্কেচ আঁকা হয়। সেই স্কেচ ধরে অনুসন্ধানে নামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ছাড়া ঘটনাস্থলের আশপাশের কয়েকটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজও বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে কুর্মিটোলা বাস স্টপে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস থেকে নামার পর ওই ছাত্রীকে মুখ চেপে রাস্তার পাশে নিয়ে যায় অজ্ঞাত ব্যক্তি। সেখানে তাকে অজ্ঞান করে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়। পরে ১০টার দিকে তার জ্ঞান ফিরলে তিনি নিজেকে নির্জন স্থানে অবিষ্কার করেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here