বাংলা প্রেস, নিউ ইয়র্ক থেকে :: করোনা ভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করায় মানুষের জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় দেড় হাজার মসজিদে আজ (১৩ মার্চ) জুমার নামাজ আদায় হয়নি। লোক সমাগম থেকে সাধারন মানুষদের দূরে রাখার কথা চিন্তা করে বিভিন্ন মসজিদে জুমার নামাজ স্থগিত করা হয়।
গত সপ্তাহ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজের ব্যাপকহারে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারনে বিভিন্ন মসজিদ কমিটি বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যেই জুমার নামাজ আদায় স্থগিত রাখার ঘোষনা দেন। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য সরকার পৃথকভাবে নিজ নিজ অঙ্গরাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গোটা দেশব্যাপী জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করেন।
এর আগে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য সরকার প্রধানরা গনসমাবেশ, পার্ক, সিনেমা হল, মার্কেট, খেলার মাঠসহ জনবহুল জায়গায় অযথা ঘোরাফেরা না করার পরামর্শ দিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় জুমার নামাজ স্থগিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রস্থ মুসলিম কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন মসজিদ কমিটির নেতারা।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩ হাজার মসজিদ রয়েছে। এর মধ্যে নিউ ইয়র্কে ২৫৭টি, ক্যালিফোর্নিয়ায় ২৪৬টি এবং টেক্সাসে ১৬৬টি মসজিদ রয়েছে। গত ৫০ বচর আগে অর্থাৎ ১৯৭০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে মসজিদের সংখ্যা ছিল মাত্র ১০০টি। মুসলিম আভিবাসীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে মসজিদের সংখ্যা দাঁড়ায় ১২০৯ টি এবং ২০১০ পর্যন্ত এর সংখ্যা দাঁড়ায় ২১০৬ টিতে।
শুক্রবার (১৩ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রে করোনা আক্রান্ত ৪১ জনের মৃত্যুর পর গোটা দেশব্যাপী জাতীয় জরুরি অবস্থার এ ঘোষণা দিলেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজের রোজ গার্ডেনে সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, বড় অঙ্কের এ অর্থ দেশের মানুষ ও প্রদেশের জন্য ব্যয় করা হবে। সবাই মিলে এ রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করবো।
প্রাণঘাতী এ ভাইরাস মোকাবিলায় ৫০ বিলিয়ন ডলারের বিশাল অংকের অর্থ বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ফেডারেল এমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি (ফেমা) সব রাজ্য ও স্থানীয় সরকারকে দুর্যোগ তহবিল সরবরাহ করবে বলে জানানো হয়েছে।
ট্রাম্প বলেন, আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য খুব শিগগিরই জানাবো। বেসরকারি ল্যাব ও ভ্যাকসিন ডেভেলপাররা মাসে ৫০ লাখ মানুষের করোনা ভাইরাস টেস্ট করতে সক্ষম হবেন।
শুক্রবার (১৩ মার্চ) সকাল পর্যন্ত ভাইরাসটির উৎপত্তির দেশ চীনে নতুন করে আরও আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মৃত্যু সংখ্যা বেড়ে হয়েছে তিন হাজার ১৭৭ জনে। একইসঙ্গে দেশটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ২১ জন। তবে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ইতালিতে ২৫০ জনের।
মৃত্যু সংখ্যা বেড়ে ৪১ জন হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৬৫ জন। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত ১৭৬২ জন। অবশ্য এরমধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৩১ জন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে, গত আড়াই মাসে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে বিশ্বের প্রায় ১২৭টি দেশ ও অঞ্চলে। এ ভাইরাসের প্রভাবে ফ্লুর মতো উপসর্গ নিয়ে যে রোগ হচ্ছে, সেই কভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন এ পর্যন্ত এক লাখ ৩৪ হাজার ৭৬৯ জন। অবশ্য এরমধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৭০ হাজার ৩৮৭ জন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here