ব্যাপক যানজট ও রেলওয়ের সময়সূচি বিপর্যয়ের ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ঈদের ঘরমুখো মানুষ।

এদিকে দু’দিনে পৃথক ঘটনায় ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে অন্তত সাতজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে।

গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে বাচ্চাদের নিয়ে ঠাঁকুরগাও যাচ্ছিলেন সরকারি চাকুরে মহসিন আলম ভূঁইয়া দম্পতি।

ন’টার বাস ধরতে তিনি বাসা থেকে বেরিয়েছেন সকাল সাতটায়। সেই বাস ছেড়েছে পৌনে এগারোটায়। বিকেল ৫টায় যখন টেলিফোনে এই দম্পতির সাথে কথা হচ্ছিলো তখনো তারা পার হতে পারেননি টাঙ্গাইল।

মি. ভূঁইয়া বলছিলেন, ‘অলরেডি নয় ঘন্টা পেরিয়ে গেছে, এখনো আমরা যমুনা ব্রিজ দেখতে পাইনি।”

এক তিল জায়গা নেই রেলেওএক তিল জায়গা নেই রেলেও

তার পাশে থেকে মিসেস ভূঁইয়া জানান, ”বাচ্চারা কান্নাকাটি করছে। সাথে করে খাবারাদাবার যা এনেছিলাম তাও শেষ হয়ে গেছে। এখন তো একদম আটকে আছি। বাস একটুও নড়ছে না।”

এই দম্পতি এখনো পথে থাকলেও দীর্ঘ সময় সময়ের যাত্রা শেষ করে উত্তরাঞ্চলীয় আরেক জেলা নওগাঁ পৌঁছেছেন প্রাক্তন সংসদ সদস্য রায়হান আক্তার রনি।

”আমি নিজের গাড়ি নিয়ে এসেছি। কোথাও থামিনি। তারপরও ১৪ ঘন্টা লাগলো। ঈদের আনন্দ পথেই শেষ।”

মূলত দেশের উত্তরাঞ্চলে যেতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ৭৫ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ এক যানজট।

যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ১১০ কিলোমিটার পথ যেতে কম-বেশি তিন ঘন্টা লাগলেও যাত্রীরা অভিযোগ করছেন এখন তাদের এই পথ পাড়ি দিতে আট-নঘন্টারও বেশী লাগছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কের যাত্রাবাড়ী থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত সড়কেও রয়েছে এমন তীর্ব্র যানজট।

মূলত ঢাকা থেকে বের হওয়ার সবগুলো পয়েন্টেই যানজটের কবলে ভোগান্তির মুখে পড়ছেন ঘরমুখো মানুষ।

যানবাহনের দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়েছে ফেরিঘাটগুলোতেও।

এদিকে, ব্যাপক সময়সূচি বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে।

মহাসড়কে অসহনীয় জট

এবিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আবু তাহের বিবিসিকে বলেন, ”ট্রেনের ভেতরে সিটে যা যাত্রী আছে, তার ওপর স্ট্যান্ডিং টিকেট হোল্ডার আছে। তারপর আবার ছাদের ওপর ওঠে। এই যাত্রীদেরতো আমাদের নিরাপদে নামতে দিতে হবে। যেখানে স্টপেজ আছে ৪-৫ মিনিট সেখানে ১০ থেকে ১৫ মিনিট লেগে যায়। এ জন্য প্রত্যেক স্টপেজে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় লাগছে আমাদের।”

”এখানেতো তাড়াহুড়ো করতে পারছি না। তাতে যাত্রীদের অসুবিধা হবে। যাত্রীদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে এই বিলম্বটা আমরা মেনে নিয়েছি। এছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই।”

এদিকে শনিবার ভোররাতে দিনাজপুরগামী একটি ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।

এর আগে শুক্রবার রাতে টাঙ্গালের মির্জাপুরে অন্য একটি ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হয়।

ওই ঘটনায় আহত আরেকজন শনিবার হাসপাতালে মারা গেছে।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/ডেস্ক রিপোর্ট

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here