যশোরে বৃহস্পতিবার দুইজন খুন হয়েছে। এদের একজনকে ছুরি দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে অপর জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। নিহতরা হচ্ছে শহরের নীলগজ্ঞ সাহা পাড়ার শহীদুল ইসলামের ছেলে শরীফুল ইসলাম (২০) ও ঝিকরগাছা উপজেলার পায়রা ডাঙ্গা গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে বেনাপোল সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের গাড়ি চালক ফারুক হোসেন(৩৫)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় বাড়ি থেকে খাওয়া দাওয়া করে শরীফুল বাইরে যায়। এরপর বেলা ১২ টার সময় ছুরি দিয়ে ক্ষত বিক্ষত করা লাশ নীলগজ্ঞ বেগম কমিউনিটি সেন্টারের পিছনে পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী থানায় খবর দিলে পুলিশ উদ্ধার করে। শরীফুলে লাশের বুক পিঠসহ বিভিন্ন স্থানে প্রায় ২০/২৫ ছুরির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে কি কারণে শরীফুল খুন হয়েছে বা কারা এই হত্যা কান্ডের সাথে জড়িত পুলিশ তা এখনো উদ্ধার করতে পারেনি। পারিবারিক একটি সূত্র জানিয়েছে, শরীফুল খুন হওয়ার কিছু সময় আগে তার সাথে সর্ব শেষ কথা হয় এলাকার শুভ নামে এক যুবকের সাথে। পুলিশ শরীফুলের মোবাইলের কল লিস্ট চেক করে শুভর নাম্বার পেয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে শুভ বা তার বন্ধুরা শরীফুল হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকতে পারে। এব্যাপারে পুলিশ খতিয়ে দেখছে। এলাকার অপর একটি সূত্র বলেছে, শরীফুল, শুভসহ বেশ কয়েকজন এলাকায় একসঙ্গে চলাফেরা করতো। বুধবার শরীফুলের বন্ধুদের মধ্যে কোন একটি ঘটনা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। বিষয়টি বৃহস্পতিবার মীমাংসা হওয়ার কথা ছিল। মীমাংসার জন্য শরীফুল শুভকে ফোন করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। এর কিছু সময় পর শরীফুলের লাশ পাওয়া যায়। এমনকি লাশ উদ্ধারের সময় ঘটনা স্থলে অনেক বন্ধুদের দেখা গেলেও শুভকে দেখা যায়নি।
হত্যাকান্ডের বিষয়ে কোতয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আশরাফ হোসেন জানান, নিজেদের অভ্যান্তরীন কোন্দলে শরীফুল খুন হয়েছে। তবে বিষয়টি পরিষ্কার নয়। খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে দুপুর দেড়টার দিকে বেনাপোল ট্যাক্সি স্টান্ডের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় সুন্দরবন কুরিয়ারের গাড়ি চালক ফারুক হোসেনকে(৩৫)। পুলিশ জানিয়েছে ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের সামনে গাড়ি রেখে ফারুক অফিসের দিকে যাচ্ছিল। এসময় মোটর সাইকেল যোগে এসে দুজন সন্ত্রাসী তার হাতের ব্যাগটি ছিনিয়ে নেয়ার চেস্টা করে। না পেরে ফারুকের বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে এক রাউন্ড গুলি করে। গুলিটি ফারুকের বুকে বিদ্ধ হয়। গুরুতর অবস্থায় নাভারন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে ফারুকের মৃত্যু হয়। ধারণা করা হচ্ছে কুরিয়ারের গাড়ি থেকে টাকা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে ফারুকে গুলি করা হয়। কিন্তু সন্ত্রাসীরা কোন কিছুই নিতে না পারলেও ফারুকের প্রানটি কেড়ে নেয়।
পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ হাসান হাফিজুর রহমান জানান, ফারুক হোসেন বেনাপোল ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের সামনে কাভার্ড ভ্যান রেখে হাতে একটি ব্যাগ নিয়ে অফিসের দিকে যাচ্ছিল। এমন সময় দুজন মোটর সাইকেল যোগে আসে। একজন মোটর সাইকেলের উপর বসে থাকে অপর জন পায়ে হেটে ফারুকের দিকে এগিয়ে গিয়ে হাতের ব্যাগ টানা টানি করে। ব্যাগে কোন টাকা ছিল না। নিতে না পেরে পিস্তল ঠেকিয়ে বুকে গুলি করে। হাসপাতালে নেয়ার পথে ফারুকের মৃত্যু হয়। এছাড়া তিনি আরো জানান, বছর খানেক আগে কুরিয়ার সার্ভিসের টাকা ছিনতাই হযেছিল। ঐ মামলার স্বাক্ষী ছিল ফারুক। এঘটনার জের ধরেও ফারুককে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। দ্রুত হত্যার রহস্য উদঘাটন হবে।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/সিরাজুল ইসলাম সিরাজ/যশোর