এন এম জিকু, ভোলা থেকে

অন্ন চাই প্রাণ চাই আলো চাই, চাই মুক্ত বায়ু
চাই বল, চাই স্বাস্থ্য আনন্দ উজ্জ্বল পরমায়ু

কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এ কথা আমরা প্রায় ভুলতে  বসেছি। ৫টি মৌলিক অধিকারের কথা থাকলেও মৌলিক অধিকার হতে বঞ্চিত ভোলার ৪০ হাজার মানুষ। আমি স্কুলে ভর্তি হতে চাই ,লেখাপড়া করে মানুষের মত মানুষ হয়ে দুর্দশা  দুর করতে চাই। পরিবারের অভাব অনটনের কারণে লেখাপড়া না করে বড় লোকদের বাসায় কাজ করি। এমন বাক্য গুলো ভোলা সদর উপজেলার নবীপুর সাইকেল সেন্টারেরমৌলিক অধিকার হতে বঞ্চিত শিশু রিপনের।

এরূপ হাজার হাজার শিশু ভোলার চর অঞ্চলের বাতাস আজ ভারি করে তুলছে। চর অঞ্চলের ৮০ শতাংশ মানুষ কৃষিকাজ আর নদীতে মাছের উপর নির্ভর এ জেলার মানুষ গুলো শিক্ষা, চিকিৎসা,যোগাযোগ ও নিরাপত্তা সহ প্রায় সবকয়টি মৌলিক অধিকার হতে  বঞ্চিত । মনপুরা, চরফ্যাশন , চর কুকরী মুকরী, ঢাল চর , মাঝের চর , চর নিউটনে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর প্রাত্যহিক জীবন চক্রে পরিণত হয়েছে।জীবিকা নির্বাহের প্রয়োজনে মাছ ধরতে গেলেও জেলেরা স্থানীয় ইজারাদেরকে মোটাঅঙ্কের টাকা পরিশোধ করতে হয়।

জীবন যুদ্ধে অবর্তীন এসব মানুষের ভাগ্য ফেরাতে সরকারি ও বেসরকারি  উদ্যোগে বিভিন্ন সংগঠন থাকলেও তা কার্যকর করার পদক্ষেপ নেয়া হয় না। জেলার ৪০ হাজার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের কাজ করার বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও তা বাস্তবায়নে ফিকে ধরেছে বলে ধারনা করছে মৌলিক অধিকার হতে বঞ্চিত সাধারন মানুষ। কৃষক মানে এখন দারিদ্র্যের প্রতিমূর্তি।রোগ শোক পুষ্টিহীনতা ও দারিদ্র্যের পেষনে জরার্জীন এ অঞ্চলের মানুষ প্রায় নিঃস্ব। গ্রামের এক র্জীন কুটিরে তাদের বসবাস ।

মাথার উপর  কোন রকম ছাউনি আর চারদিকে কোন রকম বেড়া দিয়ে তারা দিন যাপন করছে দুর্ভাগ্যের চরম অভিশাপের মধ্যে।বার বার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিভিন্ন  প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসলেও কার্যকর করার পদক্ষেপ নিচ্ছেনা কেউ। দক্ষিন অঞ্চলের জনগোষ্ঠীরা চিকিৎসা সেবা থেকে চরম ভাবে বঞ্চিত হচ্ছে।প্রত্যেক উপজেলায় স্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হলেও  হাজার হাজার জনগোষ্ঠীর জন্য বেশির ভাগ হাসপাতালেই এক জন কিংবা দু জনের বেশি ডাক্তার থাকেনা । আবার কোন কোন দিন হাসপাতালে ডাক্তার আসেনা।সরকারি উদ্যোগে নিয়োগের অভাবেই হাসপাতালের ডাক্তার ,নার্স ,স্টাফের পোস্ট খালি বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।হাসপাতাল থাকলেও পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই। ফলে এ অঞ্চলের মানুষকে স্থানীয় চিকিৎসকেরা শহরে পাঠিয়ে দিচ্ছে। অনেক সময় শহরে পৌছার আগেই পৃথিবী ছেড়ে যেতে হয় অনেককে ।

মনপরা উপজেলার ভুইয়ার হাটের সমাজ সেবক কাঞ্চন মিয়া জানায়,আমরা এখানে ভাল ডাক্তার থাকায় সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছিনা।
এদিকে নদীতে কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরা সহ অপরিনামদর্শীর  মত মাছ আহরন করে ধংশ করে দেয়া হচ্ছে।ফলে নষ্ট হচ্ছে মাছের পোনা সহ বিভিন্ন প্রজাতির ক্ষুদ্র প্রাণীর বীজ।অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে ওঠা বাধঁও রাস্তাঘাট নির্মানের ফলে জীববৈচিত্র্যসহ ভয়ংকর ভাবে কমে যাচ্ছে মাছের যোগান। এতে করে এক এক করে মৌলিক অধিকার হতে বঞ্চিত হচ্ছেঅধিকাংশ মানুষ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here