রোজভ্যালিকাণ্ডে রাজ্যের শাসকদলের পরিচিত নেতা সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হতেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার নলহাটিতে কৃষকসভার সম্মেলনে এসে তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়কে কটাক্ষ করেছিলেন সিপিএম সাংসদ মোহম্মদ সেলিম। আগত কর্মীদের উদ্দেশে সেলিমের প্রশ্ন ছিল, ‘‘আপনারা বাইরে তাপস–শতাব্দী জুটি দেখেছিলেন। জেলের ভিতরে সেই জুটিকে দেখতে চান না? কী বলেন?’’

সেলিমের ওই কটাক্ষের জবাব দিতে গিয়ে মেজাজ হারালেন শতাব্দী। মঙ্গলবার তারাপীঠের কাছে চিলার মাঠে দলীয় কর্মী সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে শতাব্দী বলেন, ‘‘এই সব নোংরা রাজনীতিবিদ, যাদের জনসমর্থন নেই, এক হাজার ভোটে জেতে— তাদের কথার জবাব দেওয়ার চেয়ে আমার বাড়ির ডগিদের (কুকুর) নিয়ে আদর করে সময় কাটানো অনেক ভাল। ” বীরভূমের সাংসদের ওই বক্তব্যের নিন্দা করেছে সিপিএম। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রামচন্দ্র ডোম বলছেন, ‘‘উনি সংস্কৃতি জগতের মানুষ হয়ে এমন ভাষায় কথা বলছেন, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তৃণমূলের সংস্কৃতি অবশ্য এমনই। ’’

ঘটনা হল, সারদা, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রোজ ভ্যালির মতো বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার দুর্নীতি নিয়ে ২০১৪ সালে তদন্ত শুরু করেছিল সিবিআই। তবে শুরুতে কিছু দিন তৎপরতা দেখানোর পরে গত প্রায় দেড় বছর ধরে কার্যত হাত গুটিয়ে ছিল তারা। ইদানীং সেই ফাইল ফের খুলেছে সিবিআই। রোজভ্যালিকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যেই তৃণমূল সাংসদ তাপস পাল এবং তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। যদিও গোটা বিষয়টিকে নরেন্দ্র মোদির নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করায় ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’র শিকার বলেই দাবি করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি।

বিজেপির ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি’তে তারা ভীত নন— এই বার্তা দিতেই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সিবিআই ডাকলে তিনি ‘বীরের মতো’ যাবেন। সুদীপ সিবিআই দফতরে গেলে সে দিনই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এ দিন সেই প্রসঙ্গ তুলে সাংবাদিকেরা শতাব্দীকে জিজ্ঞাসা করেন সিবিআই ডাকলে তিনি ‘বীরের মতো’ যাবেন কিনা। শতাব্দী অবশ্য ওই প্রশ্নের জবাব না দিয়ে দ্রুত গাড়িতে উঠে চলে যান। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here