মেঘনা নদীর অব্যাহত ভাঙনে

জহিরুল ইসলাম শিবলু, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :: মেঘনা নদীর অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হওয়ার পথে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর ও রামগতি উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। ফলে বসতভিটা, কৃষিজমি, বাজার ও সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনাসহ গোটা জনপদ হারানোর ভয়ে চরম আতঙ্কে রয়েছেন দুই উপজেলার প্রায় ৭ লাখ মানুষ। অবিলম্বে নদী ভাঙন রোধ না করলে দেশের মানচিত্র থেকে উপজেলা দুটির বিশাল অংশ মুছে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ নিয়ে বুধবার সকালে কমলনগর উপজেলার মাতাব্বরহাট এলাকায় মেঘনা নদীর পাড়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে ভাঙন কবলিত স্থানীয় কয়েক হাজার মানুষ।

মানববন্ধনের আয়োজন করে ‘কমলনগর-রামগতি বাঁচাও মঞ্চ’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

এ সময় মেঘনা নদীর ভয়াবহ ভাঙন থেকে উপজেলা দুটিকে রক্ষার দাবি তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন, কমলনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এডভোকেট সৈয়দ মো. শামছুল আলম, কমলনগর-রামগতি বাঁচাও মঞ্চের আহ্বায়ক এডভোকেট আবদুস সাত্তার পালোয়ান, জেলা আওয়ামীলীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আবদুল মতলব, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাও: হুমায়ন কবির, উপজেলা ইমাম সমিতির সভাপতি মাও: গিয়াস উদ্দিন, কবির হোসেন, আবদুল হাসেম প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, গত ২০ বছর ধরে মেঘনা নদীর অব্যাহত ভাঙনে কমলনগর ও রামগতি উপজেলার ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে ৩১টি বড় হাট বাজার, ৩৫টি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা, ৩০টি ঘুর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র, ৫২টি মোবাইল নেটওয়ার্ক টাওয়ার, ৪০০ কিলোমিটার কাঁচা-পাকা রাস্তা, ৩৭ কিলোমিটার বেড়ীবাঁধ, ৫০ হাজার একর ফসলি জমি, ৪৫ হাজার ঘরবাড়িসহ কয়েক হাজার কোটি টাকার সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

এ নিয়ে চরম আতঙ্কে রয়েছেন দুই উপজেলার প্রায় ৭ লাখ মানুষ।

তাই অবিলম্বে নদী ভাঙন রোধে বাপাউবো চিহ্নিত ৩২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করতে হবে।

এছাড়াও নদী ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে স্রোতের চ্যানেল পরিবর্তন এবং ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন স্থানে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে স্থানীয় মানুষ ও মাটিকে রক্ষা করতে হবে। তা না হলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে কমলনগর ও রামগতি নামের এই দুটি উপজেলা দেশের মানচিত্র থেকে মুছে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তারা।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here