ডেস্ক রিপোর্ট::  কেউ মারা গেলে তার স্বজনদের জন্য প্রিয়জন হারানোর ব্যথা সহ্য করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। মনের বেদনা অশ্রু হয়ে ঝরে। ইসলাম এ ধরনের শোক প্রকাশের অনুমতি দেয়, তবে শোক প্রকাশ করতে গিয়ে চিৎকার করা, বুক চাপড়ানো নিষিদ্ধ। এক হাদিসে হজরত ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, নবী কারিম (সা.) বলেছেন, ‘আপনজনের কান্নাকাটির কারণে মৃত ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়া হয়।’ তবে আপনজনের মৃত্যুতে অনিচ্ছায় চোখের পানি গড়িয়ে পড়লে কোনো অসুবিধা নেই। এর অনুমতি আছে।

অপর এক হাদিসে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘যে শোকে গালে চপেটাঘাত করে, জামার অংশবিশেষ ছিঁড়ে ফেলে এবং জাহিলি যুগের মতো চিৎকার করে সে আমাদের দলভুক্ত নয়।’ (বুখারি, হাদিস : ১২৩৫; মুসলিম, হাদিস : ২৯৬)

কান্নাকাটির বাইরেও আপনজনের মৃত্যুতে অনেকে আবেগ সামলাতে না পেরে মৃতের মুখে কপালে চুমু দিয়ে থাকেন। হাদিসের আলোকে আলেমরা এই কাজকে জায়েজ বলে থাকেন। চাই সেটা আত্মীয়-স্বজনের পক্ষ থেকে হোক কিংবা অন্যদের পক্ষ থেকে হোক। পুরুষদের জন্য মৃত পুরুষ ব্যক্তিকে চুমো খাওয়া এবং নারীদের জন্য মৃত নারীকে চুমো খাওয়া জায়েজ।

আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, ‘নবী (সা.) কাঁদতে কাঁদতে মৃত উসমান বিন মাজউনকে চুমো খেয়েছেন।’ (সুনানে আবু দাউদ : ৩১৬৩)

আয়েশা (রা.) থেকে আরও বর্ণিত আছে, ‘আবু বকর সিদ্দিক (রা.) নবী (সা.)-কে তার মৃত্যুর পর চুমো খেয়েছিলেন।’ (বুখারি : ৪৪৫৭)

ইমাম নবিব (রহ.) বলেন, ‘পরিবারের সদস্য ও বন্ধুবান্ধবের জন্য চেহারাতে চুমো খাওয়া জায়েজ। এ ব্যাপারে হাদিস সাব্যস্ত হয়েছে।’ (শারহুল মুহাজ্জাব : ৫/১১১) হাফেজ (রহ.) বলেন, এই হাদিসে পাওয়া যায় যে, মৃত ব্যক্তিকে চুমো খাওয়া জায়েজ।

শাওকানি (রহ.) বলেন, ‘যেহেতু সাহাবিদের মধ্যে এমন কাউকে পাওয়া যায়নি যিনি আবু বকর (রা.)-এর কর্মটিকে সমালোচনা করেছেন। সুতরাং এটি যেন ইজমা।’

শায়খ বিন বাজ (রহ.) বলেন, ‘মৃতব্যক্তিকে চুমো খেতে কোনো আপত্তি নেই। যদি মৃত ব্যক্তির কোনো মাহরাম নারী আত্মীয় কিংবা কোনো পুরুষ লোক তাকে চুমো খান। যেমনটি আবু বকর (রা.) নবী (সা.)-এর সাথে করেছেন।’ (মাজমুউল ফাতাওয়া : ১৩/১০২)

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here