প্রধানমন্ত্রীস্টাফ রিপোর্টার :: হাইকোর্টের রায় থাকায় মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের যে কোটা তাতে হাইকোর্টের রায় রয়ে গেছে। যেখানে হাইকোর্টের রায়ে আছে যে, মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা সংরক্ষিত থাকবে। তাহলে ওই কোটার বিষয়ে আমরা কীভাবে কোর্টের ওই রায় ভায়োলেট করব। সেটা তো আমরা করতে পারছি না। এই রায় অবমাননা করে তখন তো আমি কনডেম্প অব কোর্টে পড়ে যাব। এটা তো কেউ করতেই পারবে না।

তিনি আরও বলেন, ‘যেখানে কোটা পূরণ হবে না, কোটার যেটা খালি থাকবে, তা মেধার তালিকা থেকে নিয়োগ হবে। এটা আমরা করে দিয়েছি। গত কয়েক বছর থেকেই এই প্রক্রিয়া চালু রয়েছে।’

ভিসির বাড়িতে ভাঙচুর প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটা আন্দোলনকারীদের মধ্যে যারা ভিসির বাড়িতে ভাঙচুর ও আক্রমণ করেছে তাদেরকেই গ্রেফতার করা হচ্ছে। উচ্ছৃঙ্খলা কখনও বরদাশত করা যায় না। ভাঙচুরকারীরা ভিসির বাড়ির ক্যামেরার চিপস নিয়ে গেলেও আশপাশে থাকা ক্যামেরা দেখে তাদের একটা একটা করে খুঁজে বের করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, যারা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও আক্রমণ করেছে, তাদের তো ছাড়া হবে না। তাদেরকেই গ্রেফতার করা হচ্ছে। তদন্ত করা হচ্ছে। অনেকে স্বীকারও করছে। যত আন্দোলনই হোক না কেন, এদের ছাড়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই হবে।

কোটা আন্দোলনকারীরা কী চায়, তা সঠিকভাবে বলতে পারে না উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, কোটা নিয়ে আন্দোলন। এটা কী আন্দোলন নাকি। ঠিক তারা যে কী চায়, বারবার জিজ্ঞাসা করা হয়েছে, সেটা কিন্তু সঠিকভাবে বলতে পারে না।

তিনি বলেন, আজকে আন্দোলন তারা করছে খুব ভালো কথা। বিরোধীদলীয় নেতা বলেছেন, ছেলেপুলে আন্দোলন করতেই পারে। কিন্তু ভিসির বাড়িতে আক্রমণ করে সেখানে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া, গাড়িতে আগুন দিয়ে পোড়ানো, বাড়ি ভাঙচুর করা, বেডরুম পর্যন্ত পৌঁছে ভাঙচুর এবং লুটপাট করা, স্টিলের আলমারি ভেঙে গয়না, টাকাপয়সা সব কিছু লুটপাট করেছে। ভিসির পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে লুকিয়ে থেকে প্রাণ বাঁচিয়েছেন। এটা কি কোনও শিক্ষার্থীর কাজ? এটা কি কোনও শিক্ষার্থী করতে পারে?

শেখ হাসিনা বলেন, কথায় কথায় তারা বলে ক্লাস করবে না। ক্লাসে তালা দেয়, ক্ষতিগ্রস্ত কারা হবে? আমরা সেশনজট দূর করেছি। এদের কারণে এখন আবারও সেই সেশনজট। ১৫ টাকা সিট ভাড়া আর ৩৮ টাকা খাবার, কোথায় আছে পৃথিবীর। আজ নতুন নতুন হল বানিয়েছি। ১৫ টাকা সিট ভাড়া আর ৩৮ টাকায় খাবার খেয়ে তারা লাফালাফি করে। তাহলে সিট ভাড়া আর খাবারে বাজারদর যা রয়েছে, তাদের তা দিতে হবে। সেটা তারা দিক।

মধ্যরাতে হল থেকে ছাত্রীরা বেরিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মধ্যরাতে হল থেকে ছাত্রীরা বেরিয়ে যাবে। টেনশনে আমি বাঁচি না। আমি পুলিশকে, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বলেছি- এই মেয়েদের যেন কোনও ক্ষতি না হয়। ভোর ৬টা পর্যন্ত জেগে থেকে যার যার হলে পৌঁছে যাওয়ার পর আমি ঘুমাতে গিয়েছি।

তিনি বলেন, ‘বলেছি, কোটা সংস্কার আমরা করব। আমি তো বলেছি টোটাল কোটা বাদ দিতে। আমরা তো কেবিনেট সেক্রেটারিকে দিয়ে একটি কমিটিও করে দিয়েছি। তারা সেটা দেখছে। তাহলে এদের অসুবিধাটা কোথায়?’

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here