অপহৃত এনামুল হক কাশেমী, বান্দরবান প্রতিনিধি :: অবশেষে সাড়ে ৩ লাখ টাকার বিনিময়ে মুক্তি পেলেন বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা সদরের অদুরে ম্রো ন্যাশানাল পার্টির(এমএনপি)হাতে অপহৃত চকরিয়ার ২ কাঁচামাল ব্যবসায়ী।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত রোববার সকালে এ ২ ব্যবসায়ী তরকারি কিনতে গিয়ে এমএনপি’র হাতে অপহৃত হন। তাদের মুক্তির জন্যে প্রথমে ৬ লাখ টাকা দাবি করা হলেও পরে ৩লাখ টাকা আদায়ের পর ছেড়ে দেয় সন্ত্রাসীরা। এ ২ ব্যবসায়ীর কাছে অপহরণের সময় থাকা নগদ ৫০ হাজার টাকাও ছিনিয়ে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা।

আলীকদমে সেনাবাহিনীর একটি ব্রিগেড সদরদপ্তর, বিজিবি-সেনাবাহিনীর আরও ২টি ব্যাটালিয়ন সদরদপ্তর থাকা সত্বেও সশস্ত্র মো্র সন্ত্রাসী ম্রো ন্যাশনাল পার্টির তৎপরতা,অপহরণ ও হত্যাযজ্ঞ অব্যাহত থাকায় নাগরিকদের মাঝে চরম হতাশা বিরাজ করছে বলে মংগলবার সকালে জানিয়েছেন এলাকার বিভিন্ন পেশা শ্রেণীর মানুষ।

এ উপজেলায় সামপ্রতিক সময়ে পৃথক ঘটনায় এমএনপির ব্যাপক সন্ত্রাস,চাঁদাবাজি,অপহরণ,ধর্ষণ ও হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়। তা সত্বেও এ উপজেলায় বিশাল বহরের পুলিশ, সেনা ও বিজিবি সদস্যরা এমএনপির এসব সন্ত্রাসী তৎপরতা রোধে কোন ভুমিকাই রাখতে পারেনি বলে দফায় দফায় এহেন অপরাধমুলক কর্মকান্ড ঘটছে, নাগরিকরাই এসব গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। এ ঘটনার পর থেকে ব্যবসায়ী,সরকারি উন্নয়ন কাজের ঠিকাদার ও সচেতন মানুষের মাঝে নিরাপত্তাজনিত প্রশ্নে আতংকাবস্থা বিরাজ করছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান,গত রোববার সকালে চকরিয়া উপজেলার ভরামুহুরী এলাকা থেকে আলীকদমের জালালীপাড়া ও কচ্ছপঝিরি এলাকায় কাঁচামাল ক্রয়ের জন্যে যাওয়া ব্যবসায়ী মো.আলী হোসেন ও সাইফুল ইসলাম এমএনপির সশস্ত্র সদস্যদের হাতে অপহৃত হন।

অপহৃতদের পারিবারিক সুত্র বলেছে,তাদের কাছে থাকা নগদ ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়া হয় এবং আটক রেখে ৬লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরে ওই ব্যবসায়ীদের স্বজনরা ৩লাখ টাকা সংগ্রহ করে ঘটনাস’লে যান এবং নির্দিষ্ট স্থানে ওই টাকা পরিশোধ করেই আটক ব্যবসায়ীদের ছাড়িয়ে আনেন।

তারা সোমবার সন্ধ্যায় আলীকদম থেকে চকরিয়া উপজেলার ভরামুহুরীতে পৌছচান বলে জানা গেছে।

আলীকদমে বিশাল বহরের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি ও টহল তৎপরতা সত্বেও প্রকাশ্যে ২জন নিরীহ ব্যবসায়ী অপহরণ ও তাদরে কাছ থেকে সাড়ে ৩লাখ টাকা পণ আদায়ের ঘটনায় নাগরিকদের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা এবং পুরো ঘটনাটি প্রশ্নবিদ্ধ বলে জনপ্রতিনিধি ও সচেতন নাগরিকরা বলছেন।

সরকারি সুত্রগুলো বলছে, সামপ্রতিক সময়ে দুর্গম এলাকায় সেনা,বিজিবি এবং পুলিশের পৃথক অভিযানে বিপুল সংখ্যক এমএনপি সদস্য আটক ও অস্ত্র-শস্ত্র উদ্ধারের পরেও তাদের তৎপরতা থাকাটা অবিশ্বাস্য, তবে যৌথ বাহিনীর টহল ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে বলে সুত্র দাবি করেছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here