ডেস্ক রিপোর্ট:: বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ। প্রতিপক্ষ যেখানে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। তবু এই ম্যাচ ঘিরে জয়ের স্বপ্ন বুনছে বাংলাদেশ। ইংল্যান্ড বিশ্বসেরা হলেও অজেয় নয়। টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে রীতিমত উড়ে গিয়েছে ইংলিশরা। কিউইদের বিপক্ষে নয় উইকেটের পরাজয়। এরসঙ্গে যুক্ত হয়েছে অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার বেন স্টোকসের না থাকা।
বিপরীতে বাংলাদেশ নামবে ফুরফুরে মেজাজে। ওপেনিং স্লটে রান আসছে না। শুধু এই একটি সমস্যা বাদ দিলে টাইগাররা বেশ ব্যালেন্সড এক টিম। উপরন্তু এই ভেন্যুতেই আফগানদের বিপক্ষে জয় পেয়েছে তারা। তবে এই ম্যাচের আগে বড় নজর থাকছে দলের পেস ডিপার্টমেন্টের উপর। ইংলিশদের সঙ্গে টাইগারদের জয়ে বারবার যে নায়কের ভূমিকায় ছিলেন পেসাররাই।
২০০০ সালে প্রথম ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। এরপর দশ বছর চেষ্টা করেও জয় আসেনি বাংলাদেশের। ২০১০ সালে ব্রিস্টলে প্রথম ইংল্যান্ডকে হারানোর স্বাদ পায় টাইগাররা। ততদিনে অন্যসব টেস্ট খেলুড়ে দলের সঙ্গে অন্তত একবার করে জয় পেয়েছিল তারা। ব্রিস্টলের সেই ম্যাচ বাংলাদেশ জিতেছিল একজন পেসারের কল্যাণে। তিনি সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।
আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের স্কোর ছিল সাদামাটা। ৪৩ ওভারেও ২০০ পার হয়নি। তখনই ক্রিজে এসে মাশরাফি খেলেছিলেন সময়োচিত এক ইনিংস। ২৫ বলে ২২ রানের পর বল হাতে নিয়েছিলেন দুই উইকেট। সেদিন আর দুই পেসার রুবেল হোসেন এবং শফিউল ইসলাম শিকার করেছিলেন দুইটি করে উইকেট। শেষ ওভারে ইংলিশদের দরকার ছিল ১০ রান। ওভারের তৃতীয় বলে শফিউল আউট করেন সেট হয়ে থাকা জোনাথন ট্রটকে। ম্যান অব দ্য ম্যাচ ছিলেন মাশরাফি।
পরের বছর আরও একবার নায়ক শফিউল ইসলাম। ম্যান অব দ্য ম্যাচ ইমরুল কায়েস হলেও সেদিন ম্যাচটা নিজের করে নিয়েছিলেন শফিউলই। চট্টগ্রামে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে বাংলাদেশ মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ডের। স্পিনবান্ধব উইকেটে বল হাতে পেসারদের কিছু করা হয়নি। ইংলিশরাও দাঁড় করিয়েছিল ২২৬ রানের টার্গেট।
তবে মাঝারি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে খেই হারিয়ে ফেলে টাইগাররা। ৫২ রানের উদ্বোধনী জুটির পর হয়নি বড় কোন পার্টনারশিপ। ১৬৯ রানে হারায় ৮ উইকেট। এরপরের গল্পটা শফিউলের। পেসার শফিউল সেদিন ছিলেন নিখাঁদ ব্যাটার। ২৪ বলে ২৪ রানের ইনিংস বাংলাদেশকে এনে দেয় ২০১১ বিশ্বকাপের সেরা জয়টা।
২০১৫ বিশ্বকাপের ম্যাচেও পেসারদের নায়ক বলা চলে। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরি সেদিন করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। তার ১০৩ রানের ইনিংসের পাশাপাশি মুশফিকের ৮৯ রান বাংলাদেশকে এনে দিয়েছিল ২৭৫ রানের লড়াকু পুঁজি।
অ্যাডিলেডের ব্যাটিং পিচে এই রান করা বেশ সহজ। তবে সহজ কাজটাকে কঠিন করে তুলেছিলেন বাংলাদেশের পেসাররা। অভিজ্ঞ মাশরাফি আর রুবেলের সঙ্গে সেদিন বল হাতে ঝড় উঠিয়েছিলেন তরুণ তাসকিন। রুবেলের ৪ উইকেটের সঙ্গে মাশরাফির এবং তাসকিনের ২টি করে উইকেট বাংলাদেশকে দিয়েছিল ১৫ রানের অবিশ্বাস্য জয়।
এবারের বিশ্বকাপের ম্যাচেও পেসারদের উপর থাকবে আলাদা নজর। আরও স্পষ্ট করে বললে তাসকিনের উপর। নতুন বলে ইংলিশদের সেরা ব্যাটার দাভিদ মালানকে থামাতে বাংলাদেশের ভরসা হতে পারেন ডানহাতি এই পেসার। এখন পর্যন্ত ক্যারিয়ারে মালান আটবার উইকেট দিয়েছেন ডানহাতি পেসারদের।
জস বাটলারকে থামানোর কাজটাও হয়ত করতে হবে তাসকিনকেই। ছয়বারের দেখায় তিনবারই বাটলারকে ফিরিয়েছেন এই ডানহাতি পেসার। আজকে ধর্মশালায় সাফল্য পেতে তাই তাসকিনের দিকেই নজর থাকবে টাইগারদের।