ডেস্ক নিউজ :: সম্প্রতি মানুষের কাছে মানুষের পাশে, কোভিড- ১৯ টেলিহেলথ সেন্টার বিষয়ক একটি ফেসবুক লাইভ এর আয়োজন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, এটুআই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, বেসিস এবং স্বাস্থ্য বাতায়ন।
এ লাইভে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবার যুগ্মসচিব উম্মে সালমা তানজিয়া, এটুআই, আইসিটি ডিভিশনের এর চীফ ই-গভর্ন্যান্স স্ট্র্যাটিজিস্ট ও চীফ কোওর্ডিনেটর মা টেলিহেলথ সেন্টার ও কোভিড-১৯ টেলিহেলথ সেন্টার ফরহাদ জাহিদ শেখ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস এবং ই-হেলথের লাইন পরিচালক ডাঃ মোঃ হাবিবুর রহমান এবং সিনেসিস হেলথ এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাঃ নিজামউদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মা টেলিহেলথ সেন্টারের কোওর্ডিনেটর নবনীতা চক্রবর্তী।
অনুষ্ঠানের শুরুতে এটুআই, আইসিটি ডিভিশনের এর চীফ ই-গভর্ন্যান্স স্ট্র্যাটিজিস্ট ও চীফ কোওর্ডিনেটর মা টেলিহেলথ সেন্টার ও কোভিড-১৯ টেলিহেলথ সেন্টার, ফরহাদ জাহিদ শেখ একটি প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে এই কোভিড- ১৯ টেলিহেলথ সেন্টারের সেবা এবং সকল কর্মকান্ড বিস্তারিত আলোচনা করেন।
তিনি জানান, গত ১৩ জুন থেকে শুরু হওয়া এই ল্যাবে দুটি শিফটে, ইনবাউন্ড এবং আউটবাউন্ড ব্যবস্থায় সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ফলে রোগীরা ফোন করে যেমন সেবা পাচ্ছে তেমনি ডিজি হেলথ থেকে ডাটা সংগ্রহের মাধ্যমেও তাদের সাথে যোগাযোগ করে সেবা দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, ৪ টি ল্যাবের মাধ্যমে সম্মলিতভাবে এই ৩ মাস ধরে এই সেবা প্রদান করা হয়েছে। বিগত ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ পর্যন্ত মেডিকেল এসেসমেন্ট দেওয়া হয়েছে ১,৫১,১৯৩ জন রোগীকে, ডাক্তার ফলোআপ করেছেন ১,৫৯,৯১১ জন রোগীকে এবং ইনবাউন্ড অর্থাৎ যেসব রোগী নিজে কল করে সেবা নিয়েছেন তাদের সংখ্যা ৮৪,২৬৩ জন।
এসময় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম কোভিড- ১৯ টেলিহেলথ সেন্টার সৃষ্টির পরিকল্পনা নিয়ে জানান, কোভিড-১৯ এর শুরু থেকেই আইসিটির ডিভিশন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এর মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবাকে প্রাধান্য দিয়েই এই টেলিমেডিসিন ব্যবস্থাটি করা হয়েছে। এই পরিকল্পনার মধ্যে দেশের বাইরেও এই সেবা প্রদানের ব্যবস্থা করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এ টু আই এর পক্ষ থেকে। তিনি এটুআই, আইসিটি ডিভিশনের এর চীফ ই-গভর্ন্যান্স স্ট্র্যাটিজিস্ট ও চীফ কোওর্ডিনেটর মা টেলিহেলথ সেন্টার ও কোভিড- ১৯ টেলিহেলথ সেন্টার, ফরহাদ জাহিদ শেখকে সরকারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সাথে উনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
লাইভে উপস্থিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম কোভিড ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে এই সেন্টারটির ভুমিকার প্রশংসা করেন এবং বলেন, যেহেতু বাইরে যেয়ে স্বাস্থ্য সেবা নেওয়া অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ সেহেতু রোগীরা এই সেন্টারটির জন্য বাসায় বসে চিকিৎসা নিতে পারছেন এবং হাসপাতালে রোগীদের সংখ্যাও কমে গিয়েছে। তিনি এটুআই এর সকল সদস্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এবং ভবিষ্যতেও এই সেবা যেন অব্যাহত থাকে তার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
এছাড়াও উপস্থিত স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবার যুগ্মসচিব উম্মে সালমা তানজিয়া তার কোভিড- ১৯ টেলিহেলথ সেন্টার পরিদর্শন করার অভিজ্ঞতা নিয়ে বলেন, শুরুর দিকের রোগীর যে আধিক্য ছিল তা দিনে দিনে কমে আসার পিছনে অন্যতম কারণ এই টেলিহেলথ সেন্টার। যেহেতু একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে টেলিহেলথ সেন্টারটি এই কার্যক্রমটি সম্পাদন করে সেহেতু রোগীরা এটির পূর্ণ সুফল পেয়েছেন। তিনি আরও মনে করেন এই উদ্যোগটিকে ভবিষ্যতেও প্রসারিত করা উচিত। তিনি এই সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস এবং ই-হেলথের লাইন পরিচালক ডাঃ মোঃ হাবিবুর রহমান টেলিহেলথ সেন্টার এর সাথে সংশ্লিষ্ট এটুআই, স্বাস্থ্য বাতায়নসহ সকল সদস্যকে কৃতজ্ঞতা জানান। তাঁর মতে, আমাদের দেশে সুস্থতার হার অনেক বেশি এবং মৃত্যুর হার অনেক কম। এর পিছনে টেলিহেলথ সেন্টার এর অবদান অনেক বেশি। এই কার্যক্রমটি ভবিষ্যতে চালিয়ে যেতে তিনি জোর দিয়েছেন। করোনাকালীন সময়ে দ্বিতীয় ওয়েভ মোকাবেলার ক্ষেত্রে এটি আরো প্রসারিত করার কথা বলেছেন এবং এই ক্ষেত্রে মিডিয়া, পত্রপত্রিকার ভুমিকার ব্যপারেও গুরুত্বারোপ করেন। সেই সাথে এই কার্যক্রমটি সুষ্ঠুভাবে চালিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি সবরকমভাবে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
লাইভে উপস্থিত সিনেসিস হেলথ এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাঃ নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের সকলে সমন্বিত প্রচেষ্ঠার মাধ্যমেই আজ কোভিড টেলি-হেলথ সেন্টার অনন্য এক পর্যায়ে অবস্থান করছে। আমরা গর্বের সাথে সকলকে জানাতে চাই যে, আমাদের এই টেলিসেবা গ্রহণ করে প্রায় ৯৯ শতাংশ রোগী ঘরে থেকেই সুস্থতার মুখ দেখেছে। আমার বিশ্বাস, প্রথাগত স্বাস্থ্যব্যবস্থার পাশাপাশি এই ডিজিটাল স্বাস্থ্যব্যবস্থার সংমিশ্রণ আমাদের সার্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আরো শক্তিশালী করে তুলতে সক্ষম হবে।
স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ ও ৩৩৩ ছাড়াও কোভিড-১৯ টেলিহেলথ সেন্টারের হটলাইন নম্বর ০৯৬৬৬৭৭৭২২২ এ সার্বক্ষনিক সেবা পাওয়া যাচ্ছে।
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here