মহিলা কনস্টেবলকে রাতে ডেকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগে দিনাজপুরের বিরামপুর থানার ওসি এটিএম আমিনুল ইসলামকে ক্লোজ করা হয়েছে। দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।
বিরামপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার দিবাগত রাতে বিরামপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ এটিএম আমিনুল ইসলাম ওই থানায় কর্মরত তিনজন তরুণী কনস্টেবলের মধ্যে একজনকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে। এই ঘটনায় ওই মহিলা কনস্টেবল ব্যারাকে ফিরে এসে কান্নাকাটি করে অপর দুুই মহিলা কনেস্টবলকে ঘটনাটি জানায়। বিষয়টি জানাজানি হলে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ সুপার ময়নুল ইসলাম দোষী অফিসার্স ইনচার্জ এটিএম আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো তিন মহিলা কনস্টেবলকে বিরামপুর থানা থেকে জেলা পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করে নিয়ে আসে এবং ওসির পক্ষ নিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সকাল থেকেই তিনি তার সরকারি মোবাইল বন্ধ রাখেন।
এরপর দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি শ্লীলতাহানীর বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে জানান, বিরামপুর থানার তিন জন মহিলা কনস্টেবলকে জরুরি কাজের জন্য পুলিশ লাইনে নিয়ে আসা হয়েছে। তবে তিনি শ্লীলতাহানীর ঘটনাটি সাংবাদিকদের কাছেই প্রথম শুনলেন বলে জানান। ফুলবাড়ী সার্কেল এএসপি বিমান চন্দ্র কর্মকার সকালে জানান, মহিলা কনস্টেবল শ্লীলতাহানীর ঘটনাটি জেনে তিনি বিরামপুর থানায় গিয়েছেন। তবে জেলা পুলিশ সুপার তাকে এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেননি বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে বিরামপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ এটিএম আমিনুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং এটি আমার বিরুদ্ধে এক ধরনের অপবাদ ছড়ানোর জন্য কেউ চেষ্টা করছে।
কিন্তু ইতোমধ্যেই বিষয়টি গোটা জেলায় ছড়িয়ে পড়ায় দুপুরে পুলিশ লাইন থেকে তিন মহিলা কনস্টেবলকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ডেকে আনা হয়। ওই তিন মহিলা কনস্টেবল তাদের শ্লীলতাহানীর বিষয়টি পুলিশ সুপারকে সাফ জানিয়ে দিয়ে এ বিষয়ে অনঢ় থাকায় অবশেষে দুপুর ২টায় দোষী বিরামপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ এটিএম আমিনুল ইসলামকে ক্লোজড করার সিদ্ধান্ত হয়। বিকেলে ওসি এটিএম আমিনুল ইসলামকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনে নিয়ে আসা হয়।