অলংকার গুপ্তা, হাবিপ্রবি প্রতিনিধি ::
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মন্দির নির্মাণের দাবিতে আবারো আজ বিকেল থেকে অবস্থান কর্মসূচী পালন করছেন হাবিপ্রবির সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পসে স্থায়ী কোনো মন্দির না থাকায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সরস্বতী পূজা, দীপাবলিসহ বিভিন্ন উৎসব অস্থায়ী ভাবে বিভিন্ন জায়গায় আয়োজন করতে হয়।
সনাতনী শিক্ষার্থীদের জোড়ালো দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের ৩০ তম সভায় মন্দির নির্মাণের জন্য “সিদ্ধান্ত বিবিধ-১” গৃহীত হলেও তা ৮ বছরেও বাস্তবায়িত হয় নি। শীতকালীন ছুটি শুরুর আগে প্রসাশন থেকে আশ্বাস দেওয়া হয় যে, ছুটি শেষ হলে পূর্বের কমিটি মন্দির নির্মাণের বিষয়ে কাজ করা শুরু করবে। সেক্ষেত্রে যদি ওই কমিটির কোন সদস্য উপস্থিত না থাকে তাহলে নতুন করে কমিটি গঠন করা হবে। কিন্তু ছুটি শেষ হওয়ার ৮ম তম দিনেও কোনো কার্যক্রম শুরু না হলে সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা আবারো অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করে।
এ বিষয়ে গণিত ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী প্রসেনজিত বিশ্বাস বলেন, “বিল পাশ হবার পরেও মন্দির নিয়ে প্রশাসন গত ৮ বছর আশার বানী শুনিয়ে আসছে। এখনো তারা কোন নির্ধারিত কিছু বলছে না। শিক্ষার্থীরা বিশ্বাস হারিয়ে ফেলছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী অনূকূল প্রসাদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবছর সরস্বতী পূজা এবং দীপাবলি উৎসব হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশগ্রহণ করে। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবৎ আবেদন করা সত্ত্বেও আমাদের একটা নির্দিষ্ট প্রার্থনার জায়গা না দেওয়ায় সুন্দরভাবে উৎসবগুলো পালন করতে পারি না। যেখানে বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মসজিদ, মন্দিরসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য উপাসনালয় রয়েছে। সেখানে আমাদের না থাকাটা দুঃখজনক। বিশ্ববিদ্যালয় একটা আদর্শে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত হয়। কিন্তু প্রশাসনের এবিষয়ে দীর্ঘসূত্রতা আমাদের অনেক কষ্ট দিচ্ছে।
হাবিপ্রবির মাস্টার্স অধ্যায়নরত শিক্ষার্থী মিঠুন পাল বলেন, “বাংলাদেশ সংবিধানের ৪১ নং অনুচ্ছেদের মূল বক্তব্য ধর্মীয় স্বাধীনতা। অর্থাৎ “নাগরিক হিসেবে নিজের ধর্ম পালন, ধর্ম প্রচার,ধর্মীয় উপাসনালয় স্হাপন-রক্ষণবেক্ষণ ও উপাসনালয়ে যাওয়ার অধিকার আপনার রয়েছে”। শিক্ষা অর্জনের সর্বোচ্চ স্থান বিশ্ববিদ্যালয়, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ সংবিধান অবমাননা করা হচ্ছে। আমরা হাবিপ্রবির সনাতনী শিক্ষার্থীরা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার চাই,আমরা আমাদের রিজেন্ট বোর্ডে পাশ হওয়া উপাসনালয় দ্রুত বাস্তবায়ন চাই।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী দিপু রায় বলেন, প্রশাসন মন্দির নির্মাণ বিষয়ে যে আশ্বাস দিয়েছে তা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন না হলে কঠোন আন্দোলনে যাওয়া হবে এবং আগামীতে সব ধরনের পূজা ক্যাম্পাসের বাহিরে উদযাপন করা হবে।
এ বিষয়ে জনসংযোগ ও প্রকাশনা শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড.শ্রীপতি সিকদার জানিয়েছেন, “আগামী ১২ তারিখের মধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হবে। সেই কমিটি ৭ কর্মদিবসের মধ্যে জায়গা নির্ধারনের রির্পোট জমা দিবে।”