রাকিবুল হাসান,মনপুরা (ভোলা)প্রতিনিধি ::

নির্মাণের ১৬ বছরেও পুরোপুরিভাবে চালু হয়নি দ্বীপ উপজেলা মনপুরা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারটি।যেকারণে নষ্ট হচ্ছে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি।এই দ্বীপের মানুষের জন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে আগাম প্রস্তুতি নিতে ১৬ বছর আগে প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার নির্মাণ করা হলেও পুরোপুরিভাবে কার্যক্রম শুরু করতে না পারায় সঠিক পূর্বাভাস না পাওয়ায় এই অঞ্চলের প্রায় দেড় লাখ মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঝুঁকিপূর্ণভাবে জীবনযাপন করছে। এদিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন অপরিচ্ছন্নতা ও কর্তৃপক্ষের বেখেয়ালে আবহাওয়া অফিসের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি অকেজো হচ্ছে।

সরেজমিনে মনপুরার অবস্থিত প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে গিয়ে দেখা যায়, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে মেইন গেট তালাবদ্ধ। চারদিকে সুনসান নীরবতা। বহু খোঁজাখুঁজির পর দেখা মেলে অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী আনসার সদস্য মো. আজাদের সঙ্গে। আজাদ জানায়, আবহাওয়া অফিসে দুই জন নিরাপত্তা প্রহরীর একজন ছুটিতে রয়েছে। এছাড়াও দুই জন কর্মকর্তা রয়েছেন। কিন্তু ভেতরে গিয়ে দুজন কর্মকর্তার মধ্যে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি ।তাদের কে উপজেলা পরিষদের কেউ চেনেন না বলে জানান উপজেলা বিভিন্ন দাপ্তরিক কর্মর্কতাগন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৬ সালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের অধীনে আধুনিক যন্ত্রপাতির সুবিধা সম্পন্ন প্রথম শ্রেনীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়। নির্মানের পর থেকে দুই কর্মকর্তাকে এই অফিসে পদায়ন করা হয়। পদায়নের পর থেকে দুই কর্মকর্তাকেই দেখেননি বলে জানান এলাকাবাসী। শুধুমাত্র মাস শেষে বেতন তুলে নিয়ে চলে যান তারা। এছাড়া কোন প্রকার ঘূর্ণিঝড় কিংবা কোন মহা দূর্যোগেও দেখা মেলে না এই কর্মকর্তাদের।কোন দূর্যোগ দেখা দিলে এই বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মানুষের একমাত্র ভরসা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি তথা সিপিপি’র গণসচেতনতামূলক প্রচারের উপর ।তবে দুই কর্মকর্তা ও দুই নিরাপত্তা প্রহরী অফিস না করেই বছরের পর বছর বেতন তুলে নিচ্ছেন।

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালে উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়ন চরযতিন এলাকায় ২ একর জমির উপর প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারটি নির্মাণ করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এখানে রয়েছে বাতাসের গতিবেগ, বৃষ্টিপাত, বায়ুচাপ ও তাপমাত্রা এবং বাতাসের দিক নির্ণয়ের আধুনিক যন্ত্রপাতি।

তবে অপরিচ্ছন্নতা ও কর্তৃপক্ষের   বেখেয়ালে যন্ত্রপাতি অকেজো হওয়ার পাশাপাশি এখানে ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান জুয়েল  বলেন, আবহাওয়া অফিসে যারাই আছেন তারা ঠিকঠাক দেখাশোনা করলে আশেপাশে জঙ্গল হয়ে যেতোনা। এখানে কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনায় ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে।পদায়নকৃত কর্মকর্তা ও থাকেন না এখানে।এখানে জনবল বাড়ানোর পাশাপাশি সঠিক তদারকি দরকার।

উল্ল্যেখ্য যে দায়িত্বপ্রাপ্ত উচ্চ পর্যবেক্ষক মোঃ শহিদুল ইসলাম বহুদিন যাবৎ রাজশাহীতে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন।তাকে উপজেলার কেহু চিনেন না ।

আবহাওয়া অফিসটি উদ্বোধন না হওয়া সম্পর্কে অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল নোমান বলেন, অজানা কারনে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারটি উদ্বোধন হচ্ছে না। তবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন মহলের সঙ্গে যোগাযোগ করে অতিদ্রুত উদ্বোধন প্রক্রিয়া সম্পন করার চেষ্টা কবরো ।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here