রাকিবুল হাসান, মনপুরা (ভোলা) প্রতিনিধি :: ভোলার মনপুরায় নির্মানাধীন ঢাকনা বিহীন ড্রেণ খেয়ে নিলো রিক্সাচালক মামুনের প্রাণ। গত ২২ আগস্ট মাথায় করে বোঝা নেয়ার সময় ড্রেণের ঢাকনা না থাকায় মামুন ড্রেণে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন। তিন সপ্তাহ রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে আজ বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

মামুনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। সেইসাথে এলাকার মানুষের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে উপজেলার বানিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র হাজীর হাট বাজারে ড্রেণ নির্মানকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের উপর। ভোলার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘আলফি এন্টারপ্রাইজ’ এই ড্রেণ নির্মানের কাজ পায়। হাজীর হাট বাজারের সদর রোডে ড্রেণ নির্মানের কাজ শুরু করার ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও অবহেলার কারনে এখনো কাজ শেষ হয়নি। ড্রেণের ওয়াল নির্মান হলেও সকল ড্রেণ এখনো রয়েছে ঢাকনা বিহীন-খোলা। যার ফলে হাজীর হাট বাজারের ব্যবসায়ীসহ হাজার হাজার মানুষ রয়েছে ঝূঁকিতে। যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে রিক্সাচালক মামুনের মতো বড় কোন দূর্ঘটনা।

এ ব্যাপারে উপজেলা এলজিইডি উপসহকারী প্রকৌশলী মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, ড্রেণে ঢাকনা ও দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য আলফি এন্টারপ্রাইজের সত্বাধীকারী মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে বলা হয়েছে। আজানা কারনে এই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি কাজ বন্ধ রেখেছে।

এ ছাড়াও ড্রেণ নির্মানের কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আলফি এনটারপ্রাইজের বিরুদ্ধে।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানানযায়, ড্রেণের মাটি ভরাটের জন্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা আদায়, ড্রেণ নির্মানে ভাঙ্গা পাথরের বদলে এক কেজি ওজনের গোটা পাথর ব্যবহার, রড ব্যবহারে অনিয়ম, বর্ষায় বৃষ্টির পানিতে ডুবে থাকা ড্রেণে ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন, নিচে মাটি কম গর্ত করে রাস্তা থেকে ৩/৪ ফুট উঁচু ফুটপাত নির্মান। রাস্তায় যত্রতত্র পাথর, বালি ও রড ফেলে রাখায় জনসাধারনের চরম ভোগান্তিসহ ব্যাপক অনিয়ম ও দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ রয়েছে ঠিকাদারী পতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। শিঘ্রই এই ভোগান্তি থেকে মুক্তি চান বাজার ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে চরফ্যাশনে থাকা মনপুরা এলজিইডি’র অতিরিক্ত প্রকৌশলী মোঃ মোর্শারফ হেসেন মুঠোফোনে জানান, এই কাজ তদারকির দায়িত্বে ছিলেন উপসহকারী প্রকৌশলী মোঃ নজরুল ইসলাম। তিনি আমাকে অনিয়ম সম্পর্কে কিছুই জানাননি। শিঘ্রই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য বিভাগীয় চিঠি প্রেরণ করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here