ডেস্ক রিপোর্ট::  ইউক্রেন যুদ্ধের জের ধরে রাশিয়া থেকে প্রাকৃতিক সম্পদ রপ্তানি উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমে যাওয়ার ফলে জার্মানিকে বিকল্পের সন্ধান করতে হয়েছে। মধ্য এশিয়ার দেশগুলো সেই শূন্যস্থান পূরণ করতে কিছুটা এগিয়ে এসেছে।

সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রগুলো সরাসরি রাশিয়ার হামলার প্রতিবাদ না করলেও মস্কোর প্রভাব যতটা সম্ভব উপেক্ষা করে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছে।

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস উজবেকিস্তান ও কাজাখস্তান সফর করে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার উদ্যোগ নিয়েছেন।

তবে ইউক্রেন যুদ্ধের দ্রুত অবসানের লক্ষ্যে কাজাখস্তান রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনার পক্ষে অবস্থান নিলেও জার্মানি ইউক্রেনকে সামরিক ও অন্যান্য সহায়তা চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রেও কোনও শিথিলতা চায় না জার্মানি।

রোববার উজবেকিস্তানে অভিবাসনসহ একাধিক বিষয়ে বোঝাপড়ার পর শলৎস সোমবার কাজাখস্তান সফর করেন। রাজধানী আস্তানায় কাজাখ প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ট তোকাইয়েভের সঙ্গে আলোচনায় পেট্রোলিয়াম সরবরাহ ও অন্যান্য অর্থনৈতিক বিষয়ে কথা বলেন শলৎস।

উল্লেখ্য, বর্তমানে নরওয়ে ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পর কাজাখস্তানই জার্মানির তৃতীয় বৃহত্তম পেট্রোলিয়াম সরবরাহকারী দেশ। ২০২৪ সালের শেষে সেই সরবরাহের পরিমাণ আরও বাড়াতে চলেছে দেশটি। তোকাইয়েভ বলেন, শলৎসের সফরের পর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করছে। তিনি কৌশলগত সহযোগিতার পূর্বাভাস দেন।

রাশিয়া ও চীনের মতো প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বাণিজ্যের কারণেও বিশ্বের নবম বৃহত্তম দেশ কাজাখস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ইদানীং আরও বেড়ে গেছে। সেখানকার প্রাকৃতিক সম্পদের বিশাল ভাণ্ডারের সুবিধা নিতে চাইছে অনেক দেশ।

জার্মানিও পেট্রোলিয়ামের পাশাপাশি কাজাখস্তান থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস পেতে আগ্রহী। দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে হাইড্রোজেনও আমদানি করতে চায় জার্মানি।

মঙ্গলবার জার্মান চ্যান্সেলর আস্তানায় মধ্য এশিয়ার পাঁচটি দেশের শীর্ষ নেতাদের এক সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। সেখানে কাজাখস্তান ও উজবেকিস্তান ছাড়াও কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তানের নেতারা উপস্থিত থাকছেন।

গত বছরও বার্লিনে ‘জেডফাইভ প্লাস ওয়ান’ গোষ্ঠীর নেতারা মিলিত হয়েছিলেন। কৌশলগত আঞ্চলিক সহযোগিতা গড়ে তোলা ছিল সেই উদ্যোগের লক্ষ্য।

অর্থনীতি, জ্বালানি সরবরাহ, কাঁচামাল, জলবায়ু সংরক্ষণ ও পরিবেশ নীতির ক্ষেত্রে এই দেশগুলো সহযোগিতা নিবিড় করতে চায়। মধ্য এশিয়ায় রাশিয়া ও চীনের বিশাল প্রভাব সত্ত্বেও জার্মানি কৌশলগত স্বার্থে সেই দেশগুলোর সঙ্গে নিবিড় সহযোগিতার চেষ্টা চালাচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here