ডেস্ক রিপোর্ট:: শক্তিশালী ভূমিকম্পে লন্ডভন্ড সিরিয়ার উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্য ত্রাণ পাঠিয়েছে জাতিসংঘ। সোমবার ঘটে যাওয়া সেই মহাদুর্যোগের প্রায় তিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর এই প্রথম বিদেশি ত্রাণ পাচ্ছে গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটি।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার তুরস্ক ও সিরিয়ার সীমান্তবর্তী বাব আল হাওয়া ক্রসিং দিয়ে সিরিয়ার উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে জাতিসংঘের ত্রাণবাহী ৬টি ট্রাক প্রবেশ করেছে।
সোমবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক ও তার প্রতিবেশী দেশ সিরিয়া। ওই ভূমিকম্পের ১৫ মিনিট পর ৬ দশমিক ৭ মাত্রার আরও একটি বড় ভূমিকম্প এবং পরে আরও অনেকগুলো আফটারশক হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তাৎক্ষণিক এক বিবৃতিতে বলা হয়, তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় কাহমানমারাস প্রদেশের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে ভূপৃষ্ঠের ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল।
গাজিয়ানতেপ থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরেই তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্ত; আর সেই সীমান্তের অপর পাশে সিরিয়ার উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ আলেপ্পোর অবস্থান।
গত এক দশকের গৃহযুদ্ধে সিরিয়ার যেসব প্রদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেসবের মধ্যে আলেপ্পো অন্যতম। প্রদেশটির বিভিন্ন শহর এখনও ক্ষমতাসীন বাশার সরকারের বিরোধীরা নিয়ন্ত্রণ করে। সোমবারের ভূমিকম্পে সিরিয়ার অন্যান্য প্রদেশের তুলনায় ৪০ লাখ মানুষ অধ্যুষিত আলেপ্পোতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে অনেক বেশি।
গৃহযুদ্ধের জেরে সিরিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সিরিয়ার ওপর, যেগুলো এখনও কার্যকর আছে। তারমধ্যে একটি হলো সিরিয়ার বিমান ও সমুদ্রবন্দরে বিদেশি উড়োজাহাজ ও জাহাজ প্রবেশ বা নোঙ্গর বিষয়ক নিষেধাজ্ঞা।
এই নিষেধাজ্ঞার কারণে সিরিয়ায় ত্রাণ পাঠাতে অনেক দেশের ইচ্ছে থাকলেও উপায় ছিল না।
সরকারি হিসেব অনুযায়ী, সোমবারের ভূমিকম্পের পর গত তিন দিনে সিরিয়ায় উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ৪ হাজার মরদেহ। এছাড়া হাজার হাজার মানুষ আহতও হয়েছেন দেশটিতে।