সরকারের ডিজিটাল কার্যক্রমে অন্যতম একটি হলো ‘জেলা তথ্য বাতায়ন’। বর্তমানে অসংখ্য ত্রুটিপূর্ণ তথ্য নিয়ে চলছে পাবনা জেলা তথ্য বাতায়ন।

বর্তমান সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার সংকল্প নিয়ে একের পর এক ডিজিটাল কার্যক্রম শুরু করেছেন। গ্রামীণ মানুষের দোরগোড়ায় ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছে দিতে ইউনিয়ন পর্যায়ে চালু করা হয়েছে ই-তথ্য সেবা কেন্দ্র ।

কিন্তু সংশ্লিষ্টদের সদিচ্ছার অভাবে সরকারের এই উদ্যোগটি পাবনায় ব্যর্থতায় পরিণত হতে চলেছে। বাংলাদেশের জাতীয় ওয়েব সাইট www.bangladesh.gov.bd-তে ঢুকে District Portal এর অধীনে থাকা www.dcpabna.gov.bdএ প্রবেশ করলে পাওয়া যাবে ‘পাবনা জেলা তথ্য বাতায়ন’ শিরোনামে একটি ওয়েব পেজ।

এই পেজ থেকে পাবনা জেলা সম্পর্কে জানা যাবে নানা তথ্য। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলেও সত্য যে এখানের তথ্যগুলো সঠিক সময়ে আপলোড না করায় অসংখ্য ত্রুটিপূর্ণ তথ্য নিয়ে চলেছে ‘জেলা তথ্য বাতায়নটি’।

তথ্য বাতায়নে প্রদর্শিত তথ্য অনুযায়ী পাবনা জেলা প্রশাসকের নাম ও ছবি সঠিক থাকলেও বর্তমান পুলিশ সুপারের নাম রয়েছে ভুল। পুলিশ সুপার হিসেবে নিবাস চন্দ্র মাঝি’র নাম ও তার ছবি শোভা পাচ্ছে সেখানে। অথচ নিবাস চন্দ্র মাঝি বর্তমানে রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি পদে দায়িত্ব পালন করছেন। আর পাবনার বর্তমান পুলিশ সুপারের নাম জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর।

সিভিল সার্জনের নাম ও ছবি রয়েছে ডা. মোঃ খায়রুল আলম চৌধুরীর। যিনি অনেক আগেই অবসরে চলে গেছেন। বর্তমান সিভিল সার্জন হিসেবে ডা. গুলজার রহমান দায়িত্ব পালন করছেন।

একই বিভাগে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ইউএইচএ হিসেবে এখানে নাম দেওয়া আছে ডা. আব্দুল মজিদ। অথচ তিনি বর্তমানে স্বাস্থ্য বিভাগ রাজশাহীর উপ-পরিচালক পদে কর্মরত রয়েছেন এবং ডা. সবিজুর রহমান বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত ইউএইচএ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একইভাবে তালিকায় অন্যান্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউএইচএ’র নামও ভুল রয়েছে।

তথ্য বাতায়নে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউএনও’র নাম ও ছবি প্রকাশ করা হলেও ভাইস-চেয়ারম্যানদের কোনো অস্তিত্ব নেই। একই ভাবে শোভা পাচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদের পুরাতন চেয়ারম্যানদের নাম-ঠিকানা।

জেলা কৃষি সমপ্রসারণ দপ্তরের উপ-পরিচালক হিসেবে শোভা পাচ্ছে সানাউল্লাহ মিয়ার নাম ও ছবি। অথচ দায়িত্বে রয়েছেন আমিনুল ইসলাম।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে দিলরুবা খাতুনের নাম ও ছবি শোভা পেলেও তিনি অনেক দিন হলো বদলি হয়ে গেছেন। এই বিভাগের অধিনে জেলার প্রত্যেকটি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার তথ্যের ঘরগুলো ফাঁকা পড়ে রয়েছে।

তথ্য বাতায়নে  পৌরসভার মেয়র হিসেবে এখনো শোভা পাচ্ছে সাবেক মেয়রদের নাম ও ছবি। একই বাবে শোভা পাচ্ছে সাবেক কাউন্সিলরদের নাম ও মোবাইল নম্বর।

এ প্রসঙ্গে  সরকারি এডওয়ার্ড বিশ্ব বিদ্যালয় করেজের (উদ্ভিভ) অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র অমিত কুন্ডু বলেন, ‘আমাদের প্রয়োজনের সময় জেলা তথ্য বাতায়ন থেকে যে তথ্যটি পাব তা যদি ভুল হয়, তাহলে নামকাওয়াস্তে তথ্য বাতায়ন থাকার চেয়ে না থাকাই ভাল।

পাবনার পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম মাতুব্বর বলেন, জেলা তথ্য বাতায়নে পুলিশ সুপার সম্পর্কে যে তথ্য রয়েছে তা সত্যিই দুঃখজনক। কারণ, নিবাস চন্দ্র মাঝি স্যার বদলি হওয়ার পরেও পাবনাতে আরও একজন এসপি সাহেব চাকুরি করে গেছেন, আমি এসেছি তারও পরে। ফলে অনেক আগেই তথ্যটি হালনাগাদ করা উচিৎ ছিলো।

পুলিশ সুপার আরো বলেন, ‘আমি মনে করি এ ধরণের ত্রুটিপূর্ণ তথ্য পরিহারের ব্যাপারে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগে কর্মরত কর্মকর্তাদের আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিৎ।

এ ব্যাপারে পাবনার জেলা প্রশাসক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি সত্যিই দুঃখজনক। আমি সংশ্লিষ্ট বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সতর্ক করে দিয়ে তথ্যগুলো হালনাগাদ করার নির্দেশ দিচ্ছি।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/কলিট তালুকদার/পাবনা

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here