বাটবএবএষ্টাফ রিপোর্টার :: রাজধানীর মিরপুরের ভাসানটেক বস্তিতে বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশনের অবস্থা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শনে গেলেন নেদারল্যান্ড সরকারের একটি প্রতিনিধি দল। দলটি নেদারল্যান্ড সরকারের আর্থিক সহায়তায় ঢাকা ওয়াসার সঙ্গে ভাসানটেক বস্তির মানুষের জীবনের মানোন্নয়নের জন্য কাজ করছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টায় প্রতিনিধি দল বস্তি পরিদর্শন করে। নেদারল্যান্ডভিত্তিক সাহায্য সংস্থা সিমাবির সঙ্গে কাজ করছে ডর্‌পসহ আরও কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও)।

বস্তি পরিদর্শনে এসে সিমাবির পরিচালক (প্রোগ্রাম) ইয়াউট ভ্যান গ্যালেন বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে দ্র্বত নগরায়ন ঘটেছে। ফলে বিশেষ করে বাংলাদেশে গত কয়েক দশকে শহরগুলোয় বিপুল সংখ্যায় বস্তি বেড়ে গেছে। আর এ বস্তিগুলোতে মূলত গ্রাম থেকে আসা মানুষের বসবাস সবচেয়ে বেশি।’

তিনি বলেন, ‘অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে শহরবাসীরা সুবিধাবঞ্চিত হয়ে পড়ছে। এছাড়া এতে অবকাঠামোগত চ্যালেঞ্জ এবং সেবার মান কমে যাচ্ছে। যার মধ্যে পানি ও পয়নিষ্কাশন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জ্বালানি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতের মতো মৌলিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বস্তিবাসী। তবে আশার কথা হলো, এদেশের সরকার বিষয়টি পরিবর্তনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।’

ভ্যান গ্যালেন জানান, ‘বাংলাদেশের শহরে বস্তির বেশিরভাগ মানুষ দরিদ্র সীমার নিচে বসবাস করে। এক গবেষণায় দেখানো হয়েছে, বাংলাদেশে ২১ শতাংশ যার বিপরীতে ভারতে ১৪ শতাংশ, পাকিস্তানে ১৩ শতাংশ, শ্রীলংকায় ৫ শতাংশ এবং নেপালে ১৫ শতাংশ শহুরে মানুষ দরিদ্র সীমার নিচে বসবাস করে। এসব দীর্ঘদিন থেকে মানুষ বিশুদ্ধ পানি, পয়ঃনিস্কাশন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। ঢাকা ওয়াসা ও দেশিয় এনজিওগুলোর সহায়তায় বস্তির মানুষের জীবন-মানোন্নয়নে কাজ করছে সিমাবি।’

ভাসানটেক বস্তি পরিদর্শন করলেন নেদারল্যান্ডের প্রতিনিধি দল   তিনি আর বলেন, ‘অনেক টাকা পয়সা ব্যয় করার পর মানুষের উপকারে না আসলে তা বিফল যাবে। খোলা পায়খানা পরিহার করে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার, বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জীবন যাপনে সচেতন করতে এনজিওগুলোকে আমরা সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। বস্তিতে সকল এনজিও স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার ও স্যানিটেশনের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধার নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এতে সরকারের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সহজ হবে।’

ভ্যান গ্যালেন বলেন, বস্তিতে যে সকল এনজিও সংস্থা কাজ করছে, তাদেরকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিস্কাশন সুবিধা নিশ্চিত করা ছাড়াও মানুষকে সচেতন করতে কাজ করতে হবে। একদিনে একটি পায়খানা তৈরি করে দেওয়া যাবে। কিন্তুতু মানুষের মধ্যে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি গেঁথে না দিতে পারলে সবকিছু ব্যর্থ হয়ে যাবে। একই সঙ্গে বস্তির স্যানিটেশন কার্যক্রমকে আরো শক্তিশালী করতে ঢাকা ওয়াসার আরও সহযোগিকা কামনা করেন তিনি।

বিশুদ্ধ পানি ও পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নের কাজে নিয়োজিত বেসরকারি সংস্থা ডরপের প্রশংসা করেন ভ্যান গ্যালেন। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে অনেক এনজিওর সঙ্গে আমরা কাজ করেছি। এদের মধ্যে ডরপের কাজের দ্রুততা ও বাস্তবভিত্তি প্রয়োগ আমাকে আকৃষ্ট করেছে। অল্প সময়ের মধ্যে সাধারণ মানুষের মধ্যে সাড়া জাগানো কর্মসূচি প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়নে ডরপ এর কাজ সত্যি প্রশংসার দাবি রাখে।’

পরিদর্শনে আরও উপস্থিত ছিলেন সিমাবির (ওয়াস এশিয়া অ্যালায়েন্স) সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার সারাহ আহরারি, দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচাল প্রণব কুমার সরকার, ডরপের মিডিয়া ম্যানেজার আ হ ম ফয়সল প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here