ভারতে এক যুবকের হাতে শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও ক্যাবিনেট মন্ত্রী শারদ পাওয়ারের চড় খাওয়ার ঘটনা সেদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
দিল্লিতে লোকসভা অর্থাৎ সংসদ অধিবেশনেও বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার তর্ক বিতর্ক হয়েছে৻
হরবিন্দার সিং নামে ওই যুবকের দাবি দুর্নীতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়া দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদেই কৃষিমন্ত্রীকে এই চড় মেরেছেন তিনি৻
সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে রাজনীতিকদের ওপর ক্ষুব্ধ মানুষজনের চড়াও হওয়ার বেশ কতগুলো ঘটনা ঘটেছে।
হরবিন্দার সিং পেশায় একজন তিনচাকার মালবাহী গাড়ি টেম্পোর চালক।
কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শারদ পাওয়ার যখন বৃহস্পতিবার দিল্লি মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের অফিষে গিয়েছিলেন, তখন শারদ পাওয়ারের বাঁ দিকের গালে সজোরে চড় মারেন শক্তপোক্ত চেহারার যুবক হরবিন্দার সিং।
চড়ের বেগ এতই জোরালো ছিল যে মিঃ পাওয়ার প্রায় পড়েই যাচ্ছিলেন।
চড় মারার পর হরিবিন্দার সিং একটা ছোট ছুরিও বের করেন, যাকে বলা হয় কৃপাণ এবং যা শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ ধর্মীয় কারণে সঙ্গে রাখেন। তিনি চিৎকার করে বলতে থাকেন ‘ চির দুঙ্গা ‘ অর্থাৎ তিনি কৃষিমন্ত্রীকে চিরে ফেলবেন।
তাকে নিয়ে যাওয়ার সময় মিঃ সিং টেলিভিশন ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে দুর্নীতির নিন্দা করে বলেন দুর্নীতির কারণেই জিনিষপত্রের দাম বাড়ছে।
হরবিন্দার সিং বুক চাপড়ে ঘোষণা করেন তিনি এখন লাগাতার দুর্নীতিগ্রস্ত মন্ত্রী ও নেতাদের চড় মারবেন।
মিঃ সিং দাবি করেন সম্প্রতি আরেকজন সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুখরামকেও তিনি মারতে গিয়েছিলেন, যাঁকে দুর্নীতির দায়ে দিন কয়েক আগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মিঃ পাওয়ার ঘটনাটিকে লঘু করে দেখানোর চেষ্টা করেছেন।
‘ সমাজে দুষ্কৃতী এবং গোলমাল সৃষ্টি করার লোক রয়েছে। তাদের এতটা গুরুত্ব দেওয়া উচিত নয়’ একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে মিঃ পাওয়ার বলেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন।
দিল্লিতে বিবিসি বাংলার সংবাদদাতা শুভজিৎ বাগচী বলছেন ভারতে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ এবং পাশপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের উর্ধ্বগতিতে ক্ষুব্ধ মানুষ সুযোগ পেলেই নেতা-মন্ত্রীদের গালিগালাজ করছে, কালো পতাকা দেখাচ্ছে বা কখনও সখনও চড় থাপ্পড় দিচ্ছে।
তবে তিনি বলছেন চড়ের থেকেও যেটা বাজারে অনেক বেশি চলছে সেটা হল জুতো ছোঁড়া। এটার সুবিধা হল নিরাপত্তা ডিঙিয়ে কাছে যেতে হয় না।
২০০৯ সালে একজন শিখ সাংবাদিক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরমকে জুতো ছুঁড়ে মারেন।
জুতো ছুঁড়ে মারার ঘটনা ঘটেছে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং বিরোধী বিজেপি নেতা এল কে আদবানির ক্ষেত্রেও।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/আন্তর্জাতিক ডেস্ক