বয়স ১০৫ তবুও রহমান বক্সের ভাগ্যে জোটেনি বয়স্ক ভাতা। বাড়ি কমলগঞ্জের রহিমপুর ইউনিয়নের পাহাড়ি জনপদ কালাছড়া গ্রামে। রহমান বক্স বয়স্ক ভাতা থেকে বঞ্চিত হলেও তার দুই ছেলে মেয়ে ঠিকই পাচ্ছেন বয়স্ক ভাতা। গতকাল সকালে বাড়ীর পাশে গাছের নিচে নির্মিত বাঁশের এক মাচাঙে বসে কথা হয় রহমান বক্সের সাথে। এ মাচাঙে বসে হাত পেতে পথচারীদের কাছ থেকে সাহায্য নিয়েই কোন রকমে চলছে তার সংসার। সংসারে অভাব অনটন এখন নিত্য সঙ্গী। লাঠি ভর দিয়ে কোন রকম চলাফেরা। বাম চোখে একেবারে দেখতে না পারলেও ডান চোখে কিছুটা দেখতে পান। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তাহার বয়স জানতে চাইলে তার বয়স ১০৫ বছর বলে তিনি জানান।
কালাছড়া গ্রামের এলাহী বক্সের ছেলে শতবর্ষী রহমান বক্সের এক সময় জমিজমা ছিল। চাষাবাদে নির্ভরশীল এ পরিবারের সদস্য রহমান আজীবন কৃষি কাজ করেন। বৃদ্ধ সময়ে এখন দিনের বেলা বাড়ির আঙিনার মাচাঙ-এ বসে সংসার চালানোর জন্য হাত পাতেন পথচারীদের কাছে। তিনি বলেন,আমার সাথের কেউ বেঁচে নেই। এই বয়সে আমিই বেঁচে আছে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বয়স্ক ভাতা বা কোন সাহাষ্য পান কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন,দুই বছর আগে স্থানীয় ইউপি সদস্যের কাছে বয়স্ক ভাতার কথা বললে তিনি ছবির দেওয়ার কথা বলেন। এরপর আর কোন খোঁজ খবর নেওয়া হয়নি তার। মৃত্যূ দ্বোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা রহমান বক্সের প্রশ্ন এখন বয়স্ক ভাতা না পেলে বয়স্ক ভাতা পাব কবে? বয়সের ভারে নৈষ্য রহমান বক্সের রয়েছে ৪ ছেলে ও ২ মেয়ে। অতীতে ৬ সনত্মানের জনক এই বৃদ্ধের জমিজমা থাকলেও এখন আর কোন জমিজমা নেই। তাহার ৪ ছেলেরাও বয়স্ক হয়ে গেছেন। এর মধ্যে এক মেয়ে ও এক ছেলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বয়স্ক ভাতা পেলেও বয়স্ক ভাতার তালিকায় তার নাম না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আলাপকালে স্থানীয় ইউপি সদস্য সেলিম আহমদ চৌধুরী বলেন,রহমান বক্স বয়স্ক ভাতায় তালিকাভুক্ত হয়ে ভাতা গ্রহন করতে রাজি ছিলেন না বলেই বয়স্ক ভাতায় তার নাম দেওয়া হয়নি। তবে রহমান বক্সের দুই ছেলে মেয়ে পরিষদ থেকে বয়স্ক ভাতা পেয়ে যাচ্ছেন। কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকাশ কান্তি চৌধুরী বলেন, এ ধরনের অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। আপনাদের মাধ্যমে এই প্রথম বিষয়টি জানতে পারলাম। বিষয়টি খোঁজ করে বিহিত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/সোহেল রানা/কমলগঞ্জ